ইনসাইড বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক সংকটের কথা বলে বিকৃতির উৎসব


প্রকাশ: 27/05/2022


Thumbnail

দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি দৈনিক। প্রতিদিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা শোনায়, দুর্ভিক্ষের কথা বলে। অপব্যয়ের জন্য নানারকম নসিহত করে। প্রতিদিন এই পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, কোথায় ডাল পাতলা হয়ে গেছে, কোথায় পরোটা চিকন হয়েছে, কোথায় মানুষ তিন বেলা খাবার জন্য যুদ্ধ করছে সেসব খবর। জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর ঠিকাদারি নিয়েছে যেন ওই গণমাধ্যমটি। প্রতিদিন বিভিন্ন জিনিসপত্রের দামের খবর এমনভাবে ফলাও করে ছাপা হয় যাতে উৎসাহিত হয় বাজারের লোকজন এবং তারা এসব পণ্যের দাম বাড়াতে উৎসাহিত হয়। এই সংবাদপত্রটি গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়লে মনে হবে যে, দেশে অপচয় হচ্ছে, দেশের দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুরু হচ্ছে, এখনই কৃচ্ছতা সাধন করা দরকার। অথচ সারা জাতিকে নসিহত করা এই গণমাধ্যমটি আজ 'মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার' এর নামে এক বিকৃতির বীভৎস উৎসব করছে। 

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কোটি টাকা ব্যয়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, বাংলাদেশের বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কি কোনো দায়দায়িত্ব নেই? মানুষ যদি সত্যি সত্যি অভাবে থাকে, মানুষের যদি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবন দিশেহারা হয়ে ওঠে তাহলে তাদের পাশে তো শুধু সরকারের একার না, সকলের দায়িত্ব পালন করা উচিত। যখন দেশে এরকম সংকট (তাদের ভাষায়) তখন তারা কিভাবে কোটি টাকায় এই ধরনের উৎসবের বালখিল্যতা করে, সেটিও বড় প্রশ্ন বটে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটি অংশ বিভিন্ন সময় নসীহত করেন, মানুষকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন, মানুষকে সাদামাটা জীবন-যাপনের কথা বলতে আগ্রহী করেন, দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে বলেন। অথচ তারাই তাদের নিজেদের কাজকর্মে এসবের চর্চা করে না।

দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমটির সম্ভবত তার একটি বড় উদাহরণ জাতির সামনে হাজির করলো। অবশ্য প্রথম আলোর জন্য এটিই প্রথম নয়। এর আগে রানা প্লাজা ধসের সময় যখন সারাদেশ শোকে স্তব্ধ, তখনও তারা এ ধরনের উৎসব করেছিলো। তাদের মূল বিষয় হলো ব্যবসা এবং এই উৎসবের আলোকে তারা বাংলাদেশের কথিত তারকাদেরকে একত্রিত করে একটি আবহ তৈরি করার চেষ্টা করে। এই 'মেরিল-প্রথম আলো' অনুষ্ঠানে প্রায়ই বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিকৃত করা হয়, কৌতুকের নামে ভাঁড়ামি করা হয় এবং নানা অনভিপ্রেত বিষয় নিয়ে এসে সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দেশ যদি সত্যিই সংকটে থাকে তাহলে প্রথম আলোর এই বীভৎস উৎসব কি বন্ধ হওয়া উচিত ছিলো না? তারা যখন নিজেই বলছে এখন সবাইকে কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে, তাহলে প্রথম আলোর কৃচ্ছতা কোথায়?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭