রাশিয়ার উপর পশ্চিমাদের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, রুশ সংস্কৃতি ও জনগণের সাথে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২৭মে) মস্কোতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এই অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে রাশিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছুকে বাতিল করার যে সংস্কৃতি তারা শুরু করেছে, ইতোমধ্যে তা অযৌক্তিকতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পাশপাশি রাশিয়ার লেখক, সঙ্গীতশিল্পী ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের ব্যক্তিবর্গের ওপরও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উল্লেখ করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কোনঠাসা করার জন্য ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা তাদের প্রয়াস দ্বিগুণ, তিনগুন এমনকি চতুর্গণ পর্যন্ত বাড়িয়েছে এবং পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, দীর্ঘদিন পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।’
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল নিষেধাজ্ঞা জারি করেই ক্ষান্ত হয়নি পশ্চিম, তাদের সংবাদমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যাপকহারে বাড়ছে রুশোফোবিয়া এবং খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক দেশে সরকারের সরাসরি ইন্ধনেই ছড়ানো হচ্ছে রুশোফোবিয়া।’
এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও পাল্টা নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। বাইডেনসহ শতাধিক পশ্চিমা সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তার পর থেকে গত দু’মাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার পশ্চিমা মিত্ররা।
যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের বিশ্বাস ছিল, এসব নিষেধাজ্ঞায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাশিয়ার অর্থনীতি এবং তার পরিণতিতে ইউক্রেন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হবে রুশ বাহিনী।
নিষেধাজ্ঞায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাশিয়ার অর্থনীতি এবং তার পরিণতিতে ইউক্রেন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হবে রুশ বাহিনী এমন পরিকল্পনার ছক কষেছিল রাশিয়াবিরোধী পশ্চিমামিত্ররা।
তবে যুদ্ধের প্রথম দিকে কিছুটা হোঁচট খেলেও দেশটির মুদ্রা রুবলের দাম আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় দাড়াতে শুরু করেছে রাশিয়ার অর্থনীতি। সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে রুবলের দাম যে পর্যায়ে উঠেছে, তা গত চার বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে।