ইনসাইড পলিটিক্স

পদ্মা আতঙ্কে আক্রমণাত্মক বিএনপি


প্রকাশ: 30/05/2022


Thumbnail

আগামী ২৫ জুন পদ্মা স্বপ্নের সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ওই দিন পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এই খবর পৌঁছে গেছে দেশের ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার ১৬ কোটি মানুষের ঘরে ঘরে। এ খবরে যেন সারা বাংলায় এক উৎসব উৎসব আবহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কেটি মানুষ প্রহর গুনছে সেই ২৫ জুনের মুহূর্তের জন্য। 

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলও সে দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন। অর্থাৎ যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামো যত বেশি উন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা তত বেশি তরান্বিত। দেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলে পাল্টে যাবে দেশের অর্থনৈতিক চিত্র, পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতির ইন্টিগ্রেটরগুলো। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার প্রায় ৩ কোটি মানুষের সাথে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। দেশের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ বা তিন কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি এই সেতুর মাধ্যমে উপকৃত হবে। সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিক উৎপাদন, সেবা, পর্যটন, শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে যে ইতিবাচক গতি তৈরি হবে, প্রথম বছরে তার আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রাপ্তির পরিমাণ হবে ৩৩ হাজার ৫৫৬ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে বেশি। এটা খুব সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে যে, পদ্মা সেতু কীভাবে দেশে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাবে। আর সেটাই যেন বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দলটি পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল। তারা কখনোই চায়নি বাংলায় পদ্মা সেতু হোক। দলটির নেতাকর্মীরা এখন এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে আছে সেতু উদ্বোধন হয়ে গেলে এই বাংলার মানুষ দলটির প্রতি কি রকম বিদ্রূপ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এই ভয়ে বিমর্ষ দলটির নেতাকর্মীরা। পদ্মা সেতু দেশের এতো উন্নয়ন হবে সেটা কিছুতেই গ্রহণ করতে পারছে না দলটি। প্রতিহিংসায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে দলটির নেতাকর্মীরা। যা দলটির স্বভাবগত চরিত্র। রাজনৈতিক অঙ্গনে অভিযোগ উঠেছে যে, দলটির এই প্রতিহিংসারই বহি:প্রকাশ সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, দেশ একটি স্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলগুলো ঘরোয়াভাবে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। সব কিছু মিলিয়ে দেশের একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সহবস্থান ছিল। এর মধ্যে গত ২৪ মে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ সরকার ঘোষণা করে। এই ঘোষণায় একদিকে বাংলার মানুষের মধ্যে যেমন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে তেমন ভীতির সঞ্চার হয়েছে বিএনপিতে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে দেশের জনগণ বিএনপিকে বয়কট করতে পারে এমন ভাবনা লক্ষ্য করা গেছে বিএনপির মধ্যে। পদ্মা আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না দলটিকে। আর সেকারণেই দেশের জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি গায়ে পড়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে একাধিক মহল মনে করছে। কোনো কোনো মহল মনে করছেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, খুলনায় বিএনপির সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ এবং বগুড়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ এগুলো একই সূত্রে সম্পর্কিত। উদ্দেশ্য একটাই পদ্মা সেতু থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরানো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭