ইনসাইড আর্টিকেল

বাংলাদেশের জি আই পণ্য কড়চা


প্রকাশ: 31/05/2022


Thumbnail

মসলিন, ইলিশ, মধুমাসের সুমিষ্ট খিরসাপাতি আম বাংলাদেশ, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি- কী, নামগুলো শুনে আপনার চোখে কোন দেশের মানচিত্রটি ভাসছে? অবশ্যই বাংলাদেশ নামের একটি মায়াভরা দেশের নাম। ঐতিহ্য আর কৃষ্টির অপরূপ মেলবন্ধনের এই দেশে ওপরের যে পণ্যগুলোর নাম আপনাদের সামনে এনে হাজির করলাম, তা এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে পুরো বিশ্বে স্বীকৃতি পাবে। এগুলোকে বলা হচ্ছে জি আই পণ্য হিসেবে। আসুন, জেনে নেয়া যাক জি আই পণ্য আসলে কী- 

কোনো একটি দেশের পরিবেশ, আবহাওয়া ও সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে, তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। জি আই এর পূর্ণরূপ গ্লোবাল আইডেন্টিফিকেশন (Geographical Indication)। অর্থাৎ, পুরো বিশ্বের কাছে যে পণ্যের মাধ্যমে একটি দেশ বা অঞ্চল বা সংস্থা পরিচিতি পাবে, সেটিই হচ্ছে জি আই পণ্য। 

একটি দেশের পরিচয় আন্তর্জাতিকভাবে বহন করে জি আই পণ্য। জি আই পণ্যের সুবিধেগুলো কী, তা একনজরে দেখে নেয়া যাক- 

১) কোনো পণ্য জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তা বিশ্বজুড়ে প্রচারণা করতে ব্যাপক সুবিধা হয়। 
২) পণ্যগুলোর আলাদা কদর থাকে এবং অপরাপর দেশগুলো ওই পণ্যগুলোর সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়। 
৩) যে দেশের বা যে অঞ্চলের জি আই পণ্য, সে অঞ্চলটি জি আই পণ্যটি উৎপাদন এবং ব্র্যান্ডিং করার অধিকার এবং আইনি অধিকার পায়। 
৪) অন্য কোনো দেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উক্ত পণ্যের স্বত্ব দাবি করতে পারে না। 

আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগ (ডিপিডিটি) এই স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে। 

যে ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জি-আই এর জন্য আবেদন করেন, তার মেধাস্বত্ব লাভ করেন। ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন হয়। ২০১৫ সালে আইনের বিধিমালা তৈরির পর জি-আই পণ্যের নিবন্ধন নিতে আহ্বান জানায় ডিপিডিটি।

আসুন, একনজরে এবার বাংলাদেশের জি আই পণ্য এবং সেগুলোর স্বীকৃতি পাবার সময়কাল দেখে নিই-
 
জামদানি- ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে জামদানি শাড়ি। 

ইলিশ- ২০১৭ সালে জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে ইলিশ। 

খিরসাপাতি আম- ২০১৯ সালে জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে খিরসাপাতি আম। 

ঢাকাই মসলিন- ২০২০ সালে স্বীকৃতি লাভ করে ঢাকাই মসলিন। 

চলতি বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে নিবন্ধন লাভ করা জি আই পণ্যগুলো হলো- রাজশাহী সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, কালিজিরা চাল, দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল, নেত্রকোণার বিজয়পুরের সাদামাটি এবং সর্বশেষ জি আই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে বাগদা চিংড়ি। এছাড়াও বাংলাদেশের জি আই পণ্য হিসেবে ফজলি আমকে নিবন্ধিত করা হয়েছে, কিন্তু তা এখনও সনদ পায়নি।  

উপরের পণ্যগুলো ছাড়াও আরও অনেক পণ্য রয়েছে, যা বাংলাদেশের শত হাজারো বছরের ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে লালন করে। আমরা আশা করবো, সে পণ্যগুলোও যেন দ্রুত জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়, বাংলাদেশের নাম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সগৌরবে জ্বলজ্বল করতে থাকুক।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭