কোর্ট ইনসাইড

নওগাঁর যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মন্টুসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড


প্রকাশ: 31/05/2022


Thumbnail

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নওগাঁ জেলা জামায়াতের সাবেক আমির রেজাউল করিম মন্টুসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (৩১ মে) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেয়। ট্রাইব্যুনাল বলে, আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয়েছে।

মামলায় আসামিরা হলেন- নওগাঁর মো. রেজাউল করিম মন্টু (৬৮), মো. নজরুল ইসলাম (৬৪)ও মো. শহিদ মণ্ডল (৬২)। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।

২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। এক বছর ধরে চলা তদন্তে মোট ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামি শহিদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।

আসামি রেজাউল করিম মন্টু বর্তমানে জয়পুরহাট সদরের বাসিন্দা। জেলা শহরের প্রফেসর পাড়ার রাজাকার বিল্ডিং নামে পরিচিত বাসায় থাকতো সে। আর পলাতক নজরুল ইসলাম ঢাকায় তেজগাঁওয়ে থাকতেন। শহিদ মন্ডলের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী থানার চাঁপাডাল গ্রামে।

তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি মো. রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। বাকীরাও জামায়াতের সমর্থক বলে জানানো হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা নওগাঁর (সাবেক রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমা) বদলগাছী থানায় অপরাধ সংঘটন করে।

আসামিদের বিরুদ্ধে সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন ও মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এ সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭