ইনসাইড টক

‘১৯৭২ সালের তুলনায় ২১১ গুণ বড় জিডিপি নিয়ে হাত পাতার কারণ নেই’


প্রকাশ: 31/05/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুটো মেগা প্রজেক্ট আছে। একটা হচ্ছে সেতু নিজে, সেটাই ছিলো মূল প্রশ্ন ২০১২ সালে। আর পরবর্তীকালে আসছে সেতুর সঙ্গে রেললাইন। রেল নিয়ে আমি তেমন কোন কথা কখনো বলিনি। যখন সবাই বিরোধিতা করেছিলো, বিশ্বব্যাংক চলে যাবে বা যাচ্ছে ওই সময় জাতীয় সেমিনার করে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত একটি জাতীয় সেমিনারে একটাই বিষয় ছিলো। সেই সেমিনারের নাম ছিলো নিজ অর্থে পদ্মা সেতু। ওই জাতীয় সেমিনারে ৬ মাস কাজ করা একটা গবেষণাপত্র যার নাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু: জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ সুযোগ। এটা অর্থনীতি সমিতির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। এখানে হিসাবপত্রসহ আমি দেখিয়েছিলাম যে, বিশ্বব্যাংক যে চলে যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য একটা আশীর্বাদ। তার কারণ ১৯৭২ সালের অর্থনীতির জিডিপির আকার আর ২০১২ সালের জিডিপি ২১১ গুণ বড়।

পদ্মা সেতুর অর্থায়ন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, ১৯৭২ সালের তুলনায় ২১১ গুণ বড় জিডিপি নিয়ে কারো কাছে হাত পাতার কোনো কারণ নেই। বরং আপদ দূর হয়েছে। সেখানে আমি পরিষ্কার করে একটা সেশনে লিখেছিলাম সেটা হলো বিশ্বব্যাংক কর্তৃক পদ্মা সেতু বাতিল: জাতির জন্য আশীর্বাদ। এরপর আমি হিসাবপত্র দিয়ে কতগুলো সোর্স এবং কোনো সোর্স থেকে কত টাকা আসতে পারে এবং তাতে আমি দেখিয়েছিলাম যে, চার বছরে ২৪ কোটি টাকা যদি লাগে এই চার বছরে হুবহু ৯৮ হাজার ২শত ২৫ কোটি টাকা আহরণ করা সম্ভব। এর সাথে সম্ভাব্য উৎসগুলো দেখিয়েছিলাম। যদি ৯৮ হাজার কোটি টাকা হয়  আর ২৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে একটা পদ্মা সেতু হয় তাহলে তো আমরা আমাদের টাকা দিয়ে ৪টি পদ্মা সেতু করতে পারব। এবং সেখানে আরো দেখিয়েছিলাম যে, টাকার উৎসগুলো এমন যেগুলো থেকে কোনো সুদ দিতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, এটা নিয়ে মানুষ আমাকে অনেক কথা বলেছে, তারা বলেছে পদ্মা সেতু করতে বিশ্বব্যাংকের লোন নেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের সক্ষমতা নেই, বাংলাদেশ এটা করতে পারবে না। এর মধ্যে ওই সময় যারা স্টিল বানায় বিশেষ করে জামিলুর রেজা স্যারের সাথে কথা বললাম। একটা সেতু করতে কি কি জিনিস লাগে। সবগুলো জিনিসের নাম বলেন। উনি আমাকে পুরো তালিকা দেয়। তবে উনি বুঝেননি আমি কেন চাচ্ছি। তালিকা দেওয়া পরে আমি আমার জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের চেয়ারটা ব্যবহার করেছিলাম। সিমেন্ট কোম্পানির মালিক, রড কোম্পানির মালিকদের সঙ্গে বসলাম, পিলার যারা বানায় তাদের সঙ্গে বসলাম এবং বসে হিসাব করে দেখলাম যে সবই তো আমরা নিজেরা করতে পারি। সেখানে ভূমি অধিগ্রহণ করতে কত খরচ, নদী শাসনে, পুনর্বাসন, ব্রিজ, কার্লভাট, মূল সেতু এবং কি কি লাগবে এবং টাকা কত লাগবে, সিমেন্ট বালিসহ শ্রমিক যা কিছু আছে সব সহ আসি হিসাব করে দেখালাম। আরো হিসাব করে দেখালাম যে, দশ বছর পর্যন্ত সেতু হয়ে যাওয়ার পরে দশ লাগবে, দশ বছর পরে আর লাগবে না।

সর্বশেষ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বিনির্মাণের বিষয়টি হতে পারে উন্নয়ন জন্য হতে পারে বিশ্ব নন্দিত মেইড ইন বাংলাদেশ মডেল।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭