ইনসাইড ইকোনমি

সম্ভাবনাময় খাত দুগ্ধ শিল্প


প্রকাশ: 01/06/2022


Thumbnail

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আজ। ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ১ জুনকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ওই বছর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্তকরণে উৎসাহিত দিতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২২ এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘পরিবেশ, পুষ্টি ও আর্থসামাজিক ক্ষমতায়নে টেকসই ডেইরি সেক্টর’।

চাহিদা বিবেচনায় দেশে ইতোমধ্যে দুগ্ধশিল্পে বেশ কিছুটা বিকশিত হয়েছে। এ খাতকে টার্গেট করে দেশের বেশ কয়েকটি শিল্প গ্রুপ বিনিয়োগ করেছে। মাথাপিছু দুধের প্রাপ্যতার পরিমাণ কম হলেও গত কয়েক বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে। দেশে গত ১০ বছরে ডেইরি শিল্পে অভূতপূর্ব সাফল্য ধরা দিয়েছে। দিনের পর দিন প্রসারিত হওয়া এ শিল্পে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে দুধের উৎপাদন বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এখনও চাহিদা অনুযায়ী দুধ উৎপাদনে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫০ মিলিলিটার দুধ খেতে বলছে। কিন্তু দেশে এখন মাথাপিছু দুধের প্রাপ্যতা ১৭০ থেকে ১৭৫ মিলিলিটারের মধ্যে। তবে গত কয়েক বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে। 

সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘প্রাণিসম্পদ খাতে উন্নয়ন ও সম্ভাবনা: গণমাধ্যমের ভূমিকা' শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ডা. মো. গোলাম রব্বানী দেশের সর্বশেষ তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলেন দেশে যে হারে দুধের উৎপাদন বেড়েছে, তাতে দুগ্ধশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বেশি দূরে নয়। গত এক দশকে দেশে দুধের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন গুণ। এর মধ্যে শেষ পাঁচ বছরে বেড়েছে ৩০ হাজার কোটি লিটার। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত এবং নিউজিল্যান্ডের উদাহরণ টেনে দেশে দুধের বহুমুখী ব্যবহারের ফলে অর্থনীতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। বিশ্বে দুধ উৎপাদনে শীর্ষ স্থানে এখন ভারতের অবস্থান।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৩.৭০ লাখ টন। ২০১০-১১ অর্থবছরে দাঁড়ায় ২৯.৫০ লাখ টনে। ২০১০-১২ অর্থবছরে ৩৪.৬০ লাখ টন, ২০১২-১৩’তে ৫০.৭০ লাখ টন, ২০১৩-১৪’তে ৬০.৯২ লাখ টন, ২০১৫-১৬’তে ৭২.৭৫ লাখ টন, ২০১৬-১৭’তে ৯৪.১ লাখ টন, ২০১৮-১৯’তে ৯৯.২৩ লাখ টন এবং ২০১৯-২০’তে ১ কোটি ৬.৮০ লাখ টন দুধ উৎপাদন হয়। 

বছরে দুধের চাহিদা ১ কোটি ৫২.০২ লাখ টন চাহিদার হিসাবে বলা হয়েছে, প্রতিদিন জনপ্রতি ২৫০ মিলিগ্রাম ধরে বর্তমানে বছরে দুধের চাহিদা ১ কোটি ৫২.০২ লাখ টন। গত ২০১৯-২০ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৬.৮০ লাখ মেট্রিক টন। এ হিসাবে বছরে দুধের ঘাটতি ৪৫.২২ লাখ টন। 

দেশে দুধ প্রক্রিয়াজাত করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ আছে উল্লেখ করে ডা. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, বিশ্বে মোট উৎপাদিত দুধের পরিমাণের মাত্র ৪ শতাংশ দুধ উৎপাদন হয় নিউজিল্যান্ডে। অথচ বিশ্বব্যাপী দুগ্ধজাত পণ্যের ৪০ শতাংশ তাদের। শতকরা ৯৫ শতাংশ তারা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে থাকে। তিনি বলেন, দুধের প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে  ঘি, মাখন, ফ্লেভারড মিল্ক, আইসক্রিম ও ক্রিম, চিজস এর মতো দামী দুগ্ধজাত পণ্য উৎপানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অজনের সুযোগ আছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭