ইনসাইড টক

‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানদন্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’


প্রকাশ: 01/06/2022


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, শিক্ষার ইতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করেই সরকার ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক দুইদিন ছুটি রাখার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতোমধ্যে দুই দিন সপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। এখনকার সিস্টেমে ছাত্রদের ওপর যে পড়াশুনার চাপ রয়েছে সেটা কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা এক্সটা কারিকুলাম করার সুযোগ পাবে। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় তারা সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস করছে। এতে করে এক্সটা কারিকুলাম করার তেমন কোনো সুযোগ শিক্ষার্থীরা পায় না। কারো হয়তো গান শিখতে ইচ্ছে করছে আবার কেউ হয়তো সাঁতার শিখবে কিন্তু এসমস্ত করার জন্য স্কুলে ছাত্রদের কোনো সময় রাখা হয়নি। 

জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২৩ অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটি, এসএসসি পর্যন্ত কোনো বিভাগ বা গ্রুপ না থাকা এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আলাদা পাবলিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিং।

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, প্রকৃত শিক্ষার জন্য ক্লাসরুমের পাশাপাশি এক্সটা কারিকুলামগুলো আরো বেশি দরকার বলে আমি মনে করি। সারা পৃথিবীতে এই সিস্টেমটি আছে। আমাদের দেশে যে এটা নতুন, তা নয়। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২৩ অনুসারে নতুন যে কারিকুলাম আগামী বছর থেকে হতে যাচ্ছে, সেখানে হাতে কলমে অনেক কাজ আছে। ধরুন, স্কুলে কৃষিবিজ্ঞান পড়ানো হবে, তাহলে কৃষিবিজ্ঞানে আছে যে তাকে ছাদে গাছ লাগাতে হবে বা বাড়ির কোনো আঙ্গিনায় অথবা স্কুলের কোনো কোণায় উপযুক্ত জায়গায়। এগুলো এক সময় ছিল। সেই গাছ লাগিয়ে গাছের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয় বা দুইটি মুরগি পালন করলো, সেই মুরগিগুলো কিভাবে পালন করতে হয় এই বিষয়গুলো আগামী শিক্ষা কারিকুলামে সংযুক্ত করা হয়েছে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্লাসের সংখ্যা কমানো হচ্ছে এটা সঠিক সিদ্ধান্ত এবং এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানদন্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, এখন যেমন স্কুল পর্যায়ে বিভাগ বা গ্রুপ আছে এগুলো আগে ছিল না। সবাইকে গণিত পড়তে হবে, সবাইকে বিজ্ঞান পড়তে হবে, সবাইকে সমাজ বিজ্ঞান পড়তে হবে। ক্লাস নাইন থেকে যদি একজন ছাত্র বিজ্ঞান বা গণিত না পড়ে তাহলে শিক্ষার মাধ্যমে আমরা যে বিজ্ঞানমনস্ক একটা জাতি গঠন করতে চাই তাহলে সেখানে কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বাদ পড়ে যাবে। সেজন্য বিজ্ঞান, গণিতসহ কয়েকটি বিষয় সবাইকে পড়তে হবে। সেজন্য এসএসসি পর্যন্ত সবাইকে কমন সাবজেক্ট পড়তে হবে। এটাও আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানদন্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এরপর সে যখন ইন্টারমিডিয়েট লেভেলে যাবে তখন সে তার পছন্দ মতো বিষয় পড়বে। আগে আমাদের দেশে এটা ছিল তাতে কারো কোনো সমস্যা হয়নি। এখনও কোনো সমস্যা হবে না।

ড. মীজানুর রহমান বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির আলাদা আলাদা পাবলিক পরীক্ষা হলে এতে ছাত্রদের ওপর বাড়তি কোনো চাপ পড়বে না। বরং কমবে। এখন শিক্ষার্থীদের তো মোট ১০০০ নম্বরে পরীক্ষা হয়। এখনকার সিস্টেম অনুসারে ইন্টারমিডিয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষে ৫০০ নম্বরে পরীক্ষা দেয় এবং দ্বিতীয় বর্ষে আবার ৫০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। এতে করে দেখা যায় এক বছর পড়াশুনা করার পর তার কোনো পরীক্ষা হচ্ছে না। এর মধ্যে সে আবার দ্বিতীয় বছরের জন্য পড়াশুনা শুরু করে। এতে করে তার ওপর আরো চাপ বাড়ে। আগের সিস্টেমের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার সিস্টেম মিল ছিল না। এখন নতুন সিস্টেমে সে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে তখন তাকে প্রত্যেক ছয় মাস পর পর তার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে যাবে। এতে করে শিক্ষার্থীদের চাপ বাড়বে না বরং চাপ আরো কমবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭