ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিজের রাশিয়া-নীতি নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই ম্যার্কেলের


প্রকাশ: 08/06/2022


Thumbnail

ইউক্রেন সংকটের শুরু থেকেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তিনি নিজের ও সরকারের অবস্থান যথেষ্ট স্পষ্টভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরছেন না। সংসদ থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যমে বার বার ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা সম্পর্কে বক্তব্য রেখেও তার সেই অপবাদ ঘুচছে না। অথচ তার পূর্বসূরি আঙ্গেলা ম্যার্কেল দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকেও সংবাদ মাধ্যম যতটা সম্ভব এড়িয়ে গিয়েছেন। ক্ষমতাকালে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের সংখ্যাও বেশি ছিল না।

ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে জার্মানির রাশিয়া নীতিকে কেন্দ্র করে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ম্যার্কেলের আমলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নানা কুকর্ম সত্ত্বেও জার্মানি যথেষ্ট কড়া মনোভাব দেখায় নি বলে অভিযোগ উঠছে। বরং রাশিয়ার জ্বালানির উপর জার্মানির বেড়ে চলা নির্ভরতার খেসারত আজ দিতে হচ্ছে। শুধু ম্যার্কেল নয়, জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারকেও এমন ‘রাশিয়া প্রীতি'-র অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। এমনকি সেই কারণে কিয়েভ সফরের পরিকল্পনা করেও তাকে ইউক্রেনের নেতৃত্বের শীতল আচরণের কারণে পিছিয়ে আসতে হয়েছে।

এমনই প্রেক্ষাপটে রাশিয়া-নীতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন ম্যার্কেল। মঙ্গলবার বার্লিনে এক মঞ্চে দর্শকদের সামনে এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন নৃশংস পদক্ষেপের সপক্ষে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নিজের আমলের রাশিয়া-নীতি নিয়ে ম্যার্কেলের অবশ্য কোনো আক্ষেপ নেই। কী করলে বর্তমান পরিস্থিতি এড়ানো যেতো, তা অবশ্যই তাকে ভাবাচ্ছে। তবে ম্যার্কেলের মতে, পশ্চিমা বিশ্ব এমন কোনো নিরাপত্তা কাঠামো সৃষ্টি করতে পারতো না, যা রাশিয়াকে সন্তুষ্ট করতে পারতো। ফলে নিজের নীতির কারণে ক্ষমা প্রার্থনার কোনো কারণ দেখছেন না ম্যার্কেল। তিনি বলেন, কূটনীতিতে কাজ না হলে সেই কূটনীতি মোটেই ভুল বলে গণ্য করা চলে না।

এমনকি ২০২১ সালেও রাশিয়া বার বার ইউক্রেনের উপর হামলার ইঙ্গিত দিলেও সেই উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

ব্যক্তি হিসেবে পুতিনের মূল্যায়নেও নিজের কোনো ভুলভ্রান্তির অবকাশ দেখছেন না ম্যার্কেল। রুশ ভাষায় পারদর্শী সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর জার্মান ভাষায় পারদর্শী পুতিনকে চেনার অনেক সুযোগ পেয়েছেন। ম্যার্কলের মতে, পুতিন এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙে দিতে চেয়েছেন, যে বিষয়ে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের বার বার সতর্ক করে দিয়েছেন। সাবেক চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেল বর্তমান সরকারের নীতি নিয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও তিনি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন।

ম্যার্কেল ঠিক এই মুহূর্তে কেন ইউক্রেন সংকট নিয়ে বিস্তারিত মতামত দিলেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিছু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের মতে, তিনি নিজের দুই পূর্বসূরির দশা দেখে বিতর্ক দানা বাঁধার আগে সেই প্রক্রিয়ার রাশ নিজের হাতে রাখতে চান। হেলমুট কোল ও গেয়ারহার্ড শ্র্যোডারের মতো ব্রাত্য হতে চান না। ইউক্রেন সংকটের শুরুতে নীরবতার কারণে প্রেসিডেন্ট স্টাইনমায়ার যেভাবে প্রবল সমালোচনার শিকার হয়েছেন, সম্ভবত সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েও ম্যার্কেল নিজের অবস্থান খোলসা করতে আগ্রহী হয়েছেন। সূত্র: ডয়েচে ভেলে


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭