ইনসাইড পলিটিক্স

৩০০ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করছে বিএনপি


প্রকাশ: 10/06/2022


Thumbnail

নির্বাচনের বাকি আরো দেড় বছর। বিএনপি বলছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। সরকার পতনের আন্দোলনের লক্ষ্যে বিভিন্ন নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকও করছে দলটি। সামনে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু ভেতরের খবর হলো ৩০০ আসনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আর এই কাজটি করা হচ্ছে লন্ডনে। লন্ডনে বিএনপির পলাতক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া নিজেই ৩০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্তের কাজটি করছেন বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এই চূড়ান্ত করতে গিয়ে তারেক জিয়া নির্ভর করছেন তৃণমূলের উপর এবং বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উপর। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে গত কিছুদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে লাগাতার বৈঠক করছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির এই নেতা এবং সেই বৈঠকে মূলত পাঁচটি প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে তৃণমূলের কাছে। প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে যে,

১. একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির জনপ্রিয় প্রার্থী কে? বিএনপি বাদে সমমনা অন্য কোনো জনপ্রিয় ব্যক্তি আছে কিনা?

২. বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সময় কারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। 

৩. সরকারের সঙ্গে কাদের প্রকাশ্য বা গোপন যোগাযোগ আছে। 

৪. কারা সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য নিচ্ছে। 

৫. বিএনপির ঐক্য এবং সংগঠনের স্বার্থ রক্ষার জন্য কারা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করে। 

এ ব্যাপারে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভোটও দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এর মাধ্যমে ৩০০ আসনে বিএনপি একটি তালিকা চূড়ান্ত করবে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। প্রার্থী বাছাইয়ের কথা বিএনপির একাধিক নেতাও স্বীকার করেছেন। তবে তারা বলছেন যে, প্রার্থী বাছাইয়ের সাথে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থান নেই। তাদের মতে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার পর বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে এবং সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য বিএনপিকে একটি যোগ্য প্রার্থীর তালিকা তৈরি করতে হবে। সেই কাজটি এখন করা হচ্ছে। বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন যে, তারা আশাবাদী যে আগামী নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে, অবাধ সুষ্ঠু হবে এবং সরকার এটা করতে বাধ্য হবে। তার মতে, এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে এবং বিএনপির দাবির সম্মানজনক সমাধান হবে। এর পরপরই যে নির্বাচন হবে, সে নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঢাকায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং নজরুল ইসলাম খান নিয়মিত লন্ডনে যোগাযোগ করছেন এবং প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা নিয়ে বিভিন্ন রকম আলাপ-আলোচনায় অংশগ্রহণ করছেন। আর লন্ডনে তারেক জিয়ার নিজস্ব একটি টিম সারাদেশে বিএনপির প্রার্থীদের অবস্থান নিয়ে জরিপ পরিচালনা করছেন। বিএনপিতে সম্ভাব্য কারা প্রার্থী হতে পারে সে বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এই সমস্ত খোঁজখবর নেওয়ার মাধ্যমে বিএনপি একটি প্রার্থী তালিকা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে। বিএনপির অন্তত তিনজন নেতা বলেছেন, একাধিক বিএনপির নেতাকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এই নির্দেশ তার মনোনয়নের নিশ্চয়তা কি না, সে ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলেননি। বিএনপি মনে করছে যে, আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি একসাথে চলবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপি যতই নির্দলীয় নিরপক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উচ্চারণ করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে তাদের একটা সমঝোতা হবে এবং এই সমঝোতার ভিত্তিতে তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং সেই অংশগ্রহণের আলামতই হলো প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭