ইনসাইড থট

বাংলার গর্ব শেখ হাসিনা


প্রকাশ: 11/06/2022


Thumbnail

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বঙ্গবন্ধুর নাম লুকিয়ে নিতে হতো। যে মানুষটি সারা জীবন নিপীড়ন, নির্যাতন, জেল, জুলুম মোকাবেলা করে বাংলার আপামর জনতার অধিকারের কথা বলতেন সেই মানুষটির নাম নিলে শাস্তি পেতে হতো। তখন আমরা জনাব মিজানুর রহমানের "খবর" পত্রিকার উপর সবচেয়ে নির্ভরশীল ছিলাম। খুলনা শহরের শান্তিধাম মোড়ে খালেক চাচা সব ধরণের খবরের কাগজ বিক্রি করতেন। আমাকে বিশ্বাস করে দোকানে রেখে কাগজ আনতে যেতেন। আর সেই সুযোগে আমি সকল পত্রিকা পড়বার সুযোগ ভোগ করতাম। তখন কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম ছাপা হতোনা। কি নির্মমতা ! 

সেই নির্মমতার শেকল ভেঙে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নতুন করে যাত্রা শুরু করে। তারা একটি সাহসী পদক্ষেপ নেয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচন করে। ১৯ মে ১৯৮১ সাল। বাংলার আকাশ বাতাসে ধ্বনিত হতে থাকে- শেখ হাসিনা আসছে, জিয়ার গদি কাঁপছে। আমাদের প্রাণের নেত্রীর, আমাদের সাহসের প্রতীক শেখ হাসিনা এলেন। দলীয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় প্রকম্পিত হলো রাজপথ।  

সত্যি সত্যি কেঁপে উঠলো জিয়ার গদি। ৩০ মে সকাল বেলায় ভেসে আসলো জিয়াউর রহমান নিহত হয়েছেন। একটা পাথর যেন বুক থেকে নেমে গেলো। এখন বুঝি বঙ্গবন্ধুর নাম নিলে সাজা পেতে হবে না। কিন্তু না খুনি চক্র এক নাটক বানালো এবং সেই নাটকের নাট্যবর এরশাদ হলেন নতুন সামরিক প্রশাসক এবং পর্যায়ক্রমে প্রেসিডেন্ট। আন্দোলন থামেনি। জাতির পিতার হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে বাংলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পথে পথে জনসভা করেছেন শেখ হাসিনা। 

পরাজয়ে যিনি কখনো হার মানেনি তিনি আমাদের দেশরত্ন শেখ হাসিনা।  ১৯৯০ সালে গণ অভ্যুর্থান ঘটিয়ে এরশাদের পতন হলে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কারচুপি করে জেতানো হয় খালেদা জিয়াকে। হার মানেননি শেখ হাসিনা। আর তাই ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন প্রায় ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসেন জননেত্রী জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা। বাংলার মানুষ সেদিন বুক ভরে নিঃশাস নিয়েছিল। 

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি জাতির পিতার হত্যার বিচার সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেন জাতিকে কলংকমুক্ত করতে। উন্নয়নের এক জোয়ার বয়ে যায় বাংলাদেশে। খাদ্যে এক বিপ্লব ঘটে ১৯৯৬-২০০১ সালের শাসন আমলে। শিক্ষার উন্নয়নে তিনি ১২টি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ভৈরব সেতু, বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মিত হয় তারই আমলে। জাতি স্বপ্ন দেখে পদ্মা সেতুর। আর সেই সেতু নির্মাণের একটি ভিত্তিপ্রস্তর তিনি স্থাপন করেন।

২০০১-২০০৯ সাল পর্যন্ত নানা নিপীড়ন নির্যাতন, জেল, জুলুম মোকাবেলা করে জাতির পিতার হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসেন ৬ জানুয়ারি ২০০৯। মাত্র দুই মাসের মাথায় শত্রুরা নেমে আসে।  ৫৭ জন সামরিক অফিসারকে হত্যা করে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখে তারা। কঠিন এক পরীক্ষার মাঝে শান্ত করেন সকলকে। হারানোর বেদনা নিয়ে চলে দেশ গড়বার সাধনা। বিনামূল্যে স্কুল শিক্ষার্থীদের বই দিয়ে শুরু করলেও এখন তারা খাবার, বৃত্তি এবং পোশাক পাচ্ছে। এখন ৫২টি জেলায় আছে বিশ্ববিদ্যালয়। জ্ঞানের আলো ছড়াতে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয় করণ, মাল্টিমিডিয়া দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষাকে আধুনিকীকরণ এবং উচ্চশিক্ষাকে গবেষণামুখী করতে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ চালু করেছেন। 

পেট্রল বোমার সন্ত্রাসকে পরাস্থ করে দুর্বার গতিতে বাংলার উন্নয়ন ঘটছে।  আজ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু এক ঐতিহাসিক বাস্তবতা। 

মেট্রো রেল বা টানেল এখন আর স্বপ্ন নয়। এখন বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে ভিসার জন্য দাঁড়ালে ফিরিয়ে দেয়না ওরা। উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশকে দেখতে আসে বিশ্ববাসি। আর ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বাঁচার ও ঘরে ফেরার স্বপ্ন দেখে। আজ শান্তির সুবাতাস বইছে পাহাড়ি জনপদে।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন "তোমরা দাবায়া রাখতে পারবা না।" তারা শেখ হাসিনাকে দাবায়া রাখতে পারেনি মাইনাস টু ফর্মুলা দিয়ে ডক্টর ইউনুসেরা।  ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জেলের তালা ভেঙে দুরন্ত দুর্বার বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক শেখ হাসিনাকে মুক্ত করে। আজ সেই ঐতিহাসিক দিন। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বাঙালির জীবনে দিনটি অবিস্মরণীয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড দিয়ে যেমন হত্যা করা যায়নি মহান আল্লাহ তালার রহমতে, তেমনি ২০০৭ সালে গণতন্ত্রকে বন্দি করতে গ্রেফতার করলেও আজকের এই দিনে তিনি মুক্ত হয়েছিলেন শাসকের সৌধে ধস নামিয়ে। 

বিশ্ববাসী আজ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পর আরেকজন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি পেয়েছে - আর তিনি আমাদের নতুন ডিজিটাল প্রজন্মের জননী আমাদের গর্বের শেখ হাসিনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি।  

আজ ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে বাংলার মানুষ। আজ করোনাকে পরাস্থ করে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছে বাংলাদেশে যার অসীম সাহস, ধৈর্য, নেতৃত্বে ও বুদ্ধিমত্তার সুবাদের তিনি আমাদের গর্বের নেত্রী শেখ হাসিনা। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এর অপর নাম শেখ হাসিনা। হাজার সালাম তার চরণে।  


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭