ইনসাইড গ্রাউন্ড

পূর্বের ব্যর্থ সফর ভুলে কি সুখস্মৃতি আনতে পারবে টাইগাররা?


প্রকাশ: 16/06/2022


Thumbnail

২০০৪ সাল। বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে সবে কয়েক বছরে পা দিয়েছে টাইগাররা। সেবার উইন্ডিজ সফরে টাইগাররা মুখোমুখি হলো বিশ্ব ক্রিকেটের সুপার স্টার ব্রায়ান লারা, শিবনারায়ণ চন্দরপল, রামনরেশ সারওয়ান, ক্রিস গেইলদের। ঝড়ো গতির বল মোকাবেলা কিংবা বোলারদের সামনে বার্লিন দেয়ালের মত দাঁড়িয়ে পড়া ব্রায়ান লারাদের সাথে সমানে সমানে লড়ে ড্র বের করে নিয়েছিলো হাবিবুল বাশাররা। বাশার সহ মোহাম্মদ রফিক ও খালেদ মাসুদ পাইলটরা সেদিন সেঞ্চুরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো সবাইকে। 

উইন্ডিজ সফরে এরপর আরো একবার সুখস্মৃতির দেখা পেয়েছিলো টাইগাররা। ২০০৯ সালের সেই সফরে সিনিয়র খেলোয়াড়দের বোর্ডের সাথে দ্বন্দ্বে তুলনামূলক একেবারে খর্ব শক্তির দলের সাথে দুই ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মত র্যাঙ্কিং্যে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে টেস্ট জয় করে বাংলাদেশ। 

তবে পরের দুটি সফর যেনো বাংলাদেশ দলের জন্য এক বিভীষিকার নাম। মুশফিকুর রহিমের অধীনে ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারের পর, দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের ব্যবধান ছিল ২৯৬ রানের! আঙুলের চোট নিয়ে খেলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রথম ম্যাচে ইনিংস পরাজয় এড়ান অধিনায়ক মুশফিক। 

কিন্তু সময়ের আবর্তনে ২০১৮ সালের সবশেষ ক্যারিবীয় সফরের টেস্ট সিরিজটি যেনো পুরোপুরি ভুলে যাওয়ার মতোই কাটিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়ে গড়েছে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড। দুই ম্যাচেই হেরেছে বড় ব্যবধানে।

অর্থাৎ সবমিলিয়ে বাংলাদেশ দলের উইন্ডিজ সফরের টেস্ট ক্রিকেটকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমভাগে থাকছে ২০১০ সালের আগের দুই সিরিজ। পরেরভাগে ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত খেলা দুই সিরিজ। যেখানে দুই ভাগে মিলেছে দুই রকম অভিজ্ঞতা ও ফলাফল।

২০১০-র আগের দুই সিরিজের চার টেস্টে দুই জয় পেয়েছে টাইগাররা, ড্র করেছে এক ম্যাচ। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় মাত্র এক ম্যাচে। অন্যদিকে ২০১০ সালের পরের দুই সফরের চার টেস্টে ন্যুনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি টাইগাররা, সব কয়টি ম্যাচ হেরেছে বড় ব্যবধানে।

এবার নতুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের নতুন টেস্ট সিরিজে খেলার সামনে টাইগাররা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। এখন পর্যন্ত কোনো টিভি চ্যানেলে খেলাটি সরাসরি দেখানোর তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এর আগে ২০০৩ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ টিভিতে দেখতে পারেনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। সেই দুই ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আগের দুই সিরিজে তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে এবারও তেমন কিছুর শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

পাশাপাশি সবশেষ ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে শেষ ম্যাচে ধরাশায়ী হওয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় রীতিমতো উড়ে যাওয়ার ঘটনা এখনও প্রায় টাটকা। এর সঙ্গে আবার রয়েছে দলের নিয়মিত সদস্য মুশফিকুর রহিম, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামদের অনুপস্থিতি।

সবমিলিয়ে বেশ কঠিন অবস্থার মধ্যেই পুনরায় টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছেন বা নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আর দায়িত্ব নিয়েই দলকে তাতিয়ে দেওয়ার মন্ত্র শোনালেন ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে। সব পরিস্থিতি নিজেদের বিপক্ষে থাকায় এটিকেই ভালো সুযোগ হিসেবে দেখছেন সাকিব।

ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক বলেছেন, ‘টেস্টে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে ভালো খেলছি না। এটা একটা সুযোগ সবাইকে ভুল প্রমাণ করার, আমরা এই টেস্ট ম্যাচটাতে খুব ভালো করে এখান থেকে শুরু করতে পারি পুরো সিরিজের জন্য।’

অধিনায়ক সাকিবের জন্যও এটি নিজেকে প্রমাণের একটি সুযোগ। ২০০৯ সালে তার অধীনেই ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। আবার ২০১৮ সালের ভরাডুবিময় সিরিজেও সাকিব অধিনায়ক ছিলেন। এবার নতুন সিরিজে দলকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন সাকিব- এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭