ইনসাইড বাংলাদেশ

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে নাশকতার নানা ছক


প্রকাশ: 17/06/2022


Thumbnail

আর মাত্র আট দিন, তারপর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে। আগামী ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন এই সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে দেশে বড় ধরনের নাশকতার ছক আঁকা হয়েছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তত দুটি ভাষণে বলেছেন যে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা আঁকা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন যে, সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই নাশকতার পরিকল্পনার জন্য একাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের অন্তত একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন যে, লন্ডনে পলাতক সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত শহীদ এই নাশকতার পরিকল্পনা এঁকেছিল।

তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে যে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে অন্তত তিনটি মহল উৎসবের আমেজ নষ্ট করার জন্য তৎপর হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এটাও মনে করছে যে, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ড, ঢাকা-সিলেট রেলে আগুন ইত্যাদি সবই নাশকতার পরিকল্পনার অংশ। পদ্মা সেতুর উৎসবকে ম্লান করার জন্যই এই সমস্ত নাশকতার ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে। আগামী সাতটি দিন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে এ সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য অবহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনাগুলোর উপর নজর রাখতে হবে যেন এই স্থাপনাগুলোর উপর হামলা না হয়। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সার্বক্ষণিকভাবে আগামী ৮ দিন পুরো বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। কোনো ধরনের অঘটন, দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারেও সরকারের দিক থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা নেওয়া হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে বড় ধরনের নাশকতার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই নাশকতার পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে। তার নীলনকশা অনুযায়ী বাংলাদেশের জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হতে পারে, ঘটতে পারে আত্মঘাতী যেকোনো তৎপরতা। তাছাড়াও কিছু কিছু ব্যক্তিকে দিয়েও বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে হঠাৎ করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। এছাড়াও ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে বড় ধরনের নাশকতার ছক করতে পারে বলে বিভিন্ন মহল থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বলেছেন যে, বাংলাদেশের মাটি কখনোই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্য হতে পারে না। আর এ কারণেই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আবার নতুন করে তৎপর হয়েছে।

বাংলাদেশে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী রয়েছে, যে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীটি যখনই বাংলাদেশ কোনো উৎসবে মাতে তখনই তারা বিভিন্ন অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করে। এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে অপতৎপরতা চালাতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো মনে করছে। এসব ব্যাপারেও সরকার সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী সংগঠন গুলো এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। হলি আর্টিজানের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিরুনি অভিযানের কারণে এই জঙ্গি, উগ্র-সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলো অনেকটা দুর্বল। কিন্তু তারপরও তারা বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোনো অঘটন ঘটাতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। সার্বিকভাবে মনে করা হচ্ছে যে, যারা পদ্মা সেতু চায়নি, যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, যারা বাংলাদেশকে একটি পরনির্ভর অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, তারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে নানারকম অপতৎপরতা চালাতে পারে। কাজেই আগামী সাতটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সতর্ক থাকার সময় বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭