ইনসাইড বাংলাদেশ

বিচ্ছিন্ন জনপদ সুনামগঞ্জ, বন্যার পানি এখনও হাঁটুসমান


প্রকাশ: 20/06/2022


Thumbnail

বন্যা পরিস্থিতির কারণে গত তিন দিন ধরে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন এক জনপদের নাম সুনামগঞ্জ। সেখানে বিদ্যুৎ নেই, মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের এই অবস্থা। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িতে এখনও পানি। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও বুকসমান পানি। এক প্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের জনজীবন।

বন্যার্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের নতুনপাড়া, হাসননগর, মোহাম্মদপুর, ষোলঘর, ময়না পয়েন্ট, বক পয়েন্টে কোমর থেকে বুকসমান পানি ছিল। এখন পানি কমতে শুরু করেছে। এসব এলাকার মানুষজনকে নৌকায় চলাচল করতে দেখা গেছে। বন্যার্ত মানুষেরা বলছেন, বিদ্যুৎ নেই, মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক নেই। যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাত নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে গোটা শহর।

বন্যার্তদের অনেকেই বলেছেন, তারা এখনো ত্রাণ পাননি। কোনোরকমে খেয়ে না–খেয়ে আছেন। খাবার সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দশম শ্রেণির ছাত্র আমির হোসেনের সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, বন্যার মধ্যে সে হোস্টেলেই আছে। তার বিদ্যালয়ে ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব মানুষ খাবারের কষ্টে আছে।

দেখা গেছে, বিভিন্ন ভবনের নিচতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রের কিছু বর্নাত্য বললেন, বিদ্যালয়টির সামনেই তাঁদের বাসা। বন্যার পানিতে বাসায় বুকপানি হওয়ায় তিনি চার দিন ধরে এখানে এসে উঠেছেন। এখন কী অবস্থা—জানতে চাইলে রত্না বলেন, ‘পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন কারও কাছ থাইক্যা আমরা কুনু সাহাইয্য ফাইছি না। এইহান ছিড়া, মুড়ি খাইয়া না–খাইয়া কুনুরহমে দিনগুলা যাইতাছে।’

পৌর শহরের নতুনপাড়া এলাকা থেকে নৌকায় করে কালীবাড়ি এসেছিলেন আইনজীবী প্রদীপ আচার্য। তিনি বলেন, পানি কমতে শুরু করলেও সুনামগঞ্জের মানুষজনের মধ্যে স্বস্তি ফেরেনি। সকাল থেকে সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়নি, বরং দিনভর হালকা রোদ ছিল। 

কালীবাড়িতেই কথা হয় পশ্চিম হাজীপাড়ার বাসিন্দা চাকরিজীবী মহিবুল হাসান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার স্ত্রী, সন্তান নিয়ে অন্য এক জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। বন্যার্তদের সহায়তার জন্য কোনো স্বেচ্ছাসেবক চোখে পড়েনি। নিজেদের উদ্ধারকাজ নিজেদেরই করতে হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম এখনো চোখে পড়েনি।’

সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক ইসমাঈল হোসেন বলেন, বন্যায় বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই নিরুপায় হয়ে বন্যার পানি পান করছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুরে যেখানে বুকসমান পানি ছিল, সেখানে এখন হাঁটুসমান পানি। বিদ্যুৎ ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় পানি কমতে শুরু করলেও এখনো মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেননি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭