ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এনামুয়েল মাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট ‘এনসেম্বল’ দেশটির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো। নির্বাচনে দলটি সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে অন্যদলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে।
পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ২৮৯ আসন। কিন্তু মাক্রোঁর জোট পেয়েছে ২৪৫টি আসন।
কট্টর দক্ষিণপন্থি ল্য পেন ছিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাক্রোঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। তার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল রেলি পার্টি ৮৯টি আসনে জিতেছে। আগের পার্লামেন্টে পেনের দল পেয়েছিল আটটি আসন। ফলে আসনপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা বিপুল সাফল্য পেয়েছে এবং তৃতীয় স্থানে আছে।
জ্যঁ লুক মেলাঞ্চের নেতৃত্বে জোট বেঁধেছেন সমাজবাদী, বামপন্থি ও গ্রিন পার্টি। তাদের বলা হচ্ছে নুপেস জোট। তারা ১৩১টি আসনে জিতে ম্যাক্রোঁ জোটের পরের অবস্থানেই রয়েছেন।
নির্বাচনের পর মেলাঞ্চ বলেছেন, ‘এই ফলাফল দেখিয়ে দিচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ব্যর্থ।’
নির্বাচন পরবর্তী মাক্রোঁর মন্ত্রীরা বলেছেন, এই ফলাফল হতাশাজনক। তারা প্রথম স্থানে আছেন ঠিকই কিন্তু ফলাফল তাদের প্রত্যাশামতো হয়নি।
মাক্রোঁর জোটের শরিক নেতা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রী এবং পরিবেশমন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাক্রোঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহযোগী ক্রিস্টোফে ক্যাস্টানের হেরে গেছেন।
জটিল পরিস্থিতি
এই নির্বাচনী ফলাফল পরিস্থিতিকে জটিল করে দিয়েছে। হাং পার্লামেন্ট হয়েছে, কেউই চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। ফলে রাজনৈতিক দিক থেকে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এখন দল ও জোটগুলি ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে পারে। সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট মিতেরঁর আমলে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত এমনই হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিকল্প হলো, রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং আবার নির্বাচন।
গত এপ্রিলেই মাক্রোঁ দ্বিতীয়বারের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস পরেই পার্লামেন্ট নির্বাচনে সেই মাক্রোঁই নিজের জোটকে জেতাতে পারলেন না।
কিং মেকার
রক্ষণশীল এলআর ৬১টি আসন পেয়েছে। তারাই কিং-মেকারের ভূমিকা নিতে পারে।
পার্লামেন্টে তার জোট ক্ষমতায় না এলে মাক্রোঁ তার সংস্কার কর্মসূচি রূপায়ণ করতে পারবেন না। অবসরের বয়স বাড়াতে পারবেন না। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে বাধার মুখে পড়তে হবে।