ইনসাইড থট

বর্ষাকালের পদ্মা বিশ্বের সর্বাধিক খরস্রোতা নদী


প্রকাশ: 20/06/2022


Thumbnail

প্রায় শুনি, ‘বিশ্বের সর্বাধিক খরস্রোতা নদী দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী। খরস্রোতার দিক থেকে আমাজানের পরেই পদ্মা নদী’। কিন্তু জেনে অবাক হবেন, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদী আমাজানের চেয়েও অধিক খরস্রোতা। সে সময় পদ্মা নদী সাড়ে ৭ লাখ কিউমেক পানি বঙ্গোপসাগরে নিঃসরণ করে  (সূত্র উইকিপিডিয়া)। যখন নদীতে প্রবাহিত পানি প্রতি সেকেন্ডে ঘনমিটারে পরিমাপ করা হয় তখন তাকে কিউমেক বলে।

আটলান্টিকের প্রবেশদ্বারে আমাজানের গড় পানি নিঃসরণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৩০ হাজার কিউমেক। সর্বনিন্ম ১ লাখ ৮০ হাজার কিউমেক। সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ ৪০ হাজার কিউমেক। আমাজান থেকে নিঃসরিত সর্বোচ্চ পানির দ্বিগুণের বেশি পরিমাণ পানি প্রতি সেকেন্ডে পদ্মা নদী নিঃসরণ করে বর্ষা মৌসুমে। বর্ষার পদ্মা নদী অধিক খরস্রোতা হলেও বিশ্বের খরস্রোতা নদীর তালিকায় এর অবস্থান তৃতীয়। কারণ শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার পানি নিঃসরণের পরিমাণ মাত্র ১৫ হাজার কিউমেক। যার ফলে এর গড় পানি নিঃসরণের পরিমাণ ৩৫ হাজার কিউমেক। বর্ষা মৌসুমে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খরস্রোতা নদী হয়েও শুকনো মৌসুমে পানিস্বল্পতার কারণে এর গড় এতো কম।

বিশ্বের খরস্রোতা নদীর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকার কঙ্গো নদী। এর গড় পানি নিঃসরণের পরিমাণ ৪১ হাজার ২ শ’ কিউমেক।  সর্বনিন্ম ২৩ হাজার ও সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার কিউমেক।

২০১৩ সালে কানাডিয়ান হাইড্রোটেকনিক্যাল কনফারেন্সে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর নির্মাণ স্থলে গড় পানি নিঃসরণের পরিমাণ ৩০ হাজার কিউমেক। সেখানে শুষ্ক মৌসুমে পানি নিঃসরণ হয় ১৫ হাজার কিউমেক। তবে গত একশ বছরের গড় সর্বোচ পানি নিঃসরণের পরিমাণ ১ লাখ ২৮ হাজার কিউমেক। উক্ত সেমিনারে কানাডিয়ান পানি বিজ্ঞানীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য বন্যা বা অতিবন্যার সময় সেতু অঞ্চলে পানি নিঃসরণের পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজার কিউমেক পর্যন্ত বাড়তে পারে। যা কঙ্গো নদীর সর্বোচ্চ পানি নিঃসরণের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। আবার আমাজানের সর্বনিন্ম পানি নিঃসরণের পরিমাণের খুব কাছাকাছি। তাই পদ্মা সেতু স্থানটিকে বলা হয় আমাজানের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরস্রোতা নদী।

খরস্রোতার দিক বিবেচনা করলে এমন প্রকল্প নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব মোড়লদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করাও একটি চ্যালেঞ্জ।  আর এমনি একটি চ্যালেঞ্জ প্রকল্প ‘নিজেদের টাকায়’ করার সাহস, সেতো আরেক বড় চ্যালেঞ্জ। এত সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক খরস্রোতা নদীর বুকে সত্যিই দাঁড়িয়ে গেছে ‘পদ্মা সেতু’। আর কদিন পরেই চ্যালেঞ্জটি আর চ্যালেঞ্জ নয়, স্বপ্ন নয়। এটি এখন বাস্তব।  সেতুটির নাম হতে পারতো ‘শেখ হাসিনা সেতু’। কিন্তু তিনি সেটা চাননি। করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু সেতুটির নাম যাই হোক, দেশবাসী জানে সব। পদ্মা সেতু মানে শেখ হাসিনা সেতু। কারণ, এত সব চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন একজন শেখ হাসিনা। একজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জয়তু শেখ হাসিনা। জয়তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭