আফগানিস্তানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ২৫০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরো বহু মানুষ। সেই সাথে ধ্বংস হয়েছে বহু স্থাপনা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১।
বুধবার (২২ জুন) দিনগত রাত ২টার দিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে এ ভূকম্পন আঘাত হানে। খবর বিবিসির। বাংলাদেশ সময় বুধবার (২২ জুন) দিনগত রাত ২টা ৫৪ মিনিটে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আঘাত হানে এ ভূকম্পন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) অবশ্য ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৯ রেকর্ড করেছে। এতে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান-পাকিস্তান উভয় দেশই।
স্থানীয় এক সরকারী কর্মকর্তা বলেছেন, এখন পর্যন্ত ২৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তালিবান প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান মহম্মদ নাসিম হক্কানি জানান, বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে। সেখানে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা আড়াইশোর বেশি।
নানগড়হার এবং খোস্ত প্রদেশেও ভূমিকম্পের জেরে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে তালিবান প্রশাসন সূত্রে খবর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরা ছবিতে পাকতিকা প্রদেশে স্ট্রেচারে আহত ব্যক্তিদের পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপ ও বাড়িঘর ধ্বংস হতে দেখা গেছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের ন্যাশনাল সিসমিক মনিটরিং সেন্টার জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানের খোস্ত শহরে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৪ কিলোমিটার গভীরে।
বুধবার দিনের প্রথম দিকে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫১ কিলোমিটার। তবে বুধবার সকালে প্রাথমিকভাবে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া না গেলেও পরে বেলা বাড়তেই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির খবর সামনে এলো।
জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ, মুলতান, ভাক্কর, ফলিয়ে, পেশোয়ার, মালাকান্দ, সোয়াট, মিয়ানওয়ালি, পাকপত্তন, বুনেরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূমিকম্পে মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে পাকিস্তানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত শুক্রবার ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইসলামাবাদ, পেশওয়ার, রাওয়ালপিন্ডি, মুলতান। এছাড়া ফয়সালাবাদ, অ্যাবোটাবাদ, সোয়াট, বুনার, কোহাত এবং মালাকান্দেও ওই কম্পন অনুভূত হয়।
এদিকে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএসএসসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির তীব্রতা উৎপত্তিস্থল থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরেও অনুভূত হয়, যার প্রভাব পড়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের অন্তত ১২ কোটি মানুষের ওপর।