ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্যার সঙ্গে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে মেলাচ্ছে কারা?


প্রকাশ: 23/06/2022


Thumbnail

আগামী ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আমাদের অহংকারের প্রতীক আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। সারাদেশে বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যেন এক মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়। কিন্তু এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে বাঙালির প্রাণের উৎসবকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে কোনো কোনো মহল। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে সমস্ত ব্যক্তি-গোষ্ঠী পদ্মা সেতু চায়নি, যারা পদ্মা সেতু হবে না বলে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা করেছে তারাই এখন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই নানা ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান হয়েছিল। সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, ঢাকা-সিলেট রেলে আগুন লাগার ঘটনা এবং বিভিন্ন স্থানে নাশকতার চেষ্টা প্রকাশিত হয়েছে। এরকম প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই জনগণকে জানিয়েছিলেন যে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে নানা রকম নাশকতার চেষ্টা চলছে। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, বড় বড় স্থাপনা গুলোর উপর আক্রমণ হতে পারে। এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এই পরিস্থিতি যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ভাবে সামাল দিলো, তখন শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র, জনগণকে বিভ্রান্ত করার এক নতুন কৌশল।

বাংলাদেশে প্রতিবছরই জুন থেকে আগস্টের শেষ ভাগ পর্যন্ত ছোট-বড় নানা আকারে বন্যা হয়। এবার সিলেটের বন্যার মাত্রাটা অনেকটাই বেশি। কিন্তু এই বন্যা বাংলাদেশের জন্য একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বন্যার সঙ্গেই বাংলাদেশের মানুষের বসবাস। এরকম বন্যা মোকাবেলা করেই আমরা টিকে থাকি। আর এই বন্যা মোকাবিলায় বিশ্বের যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ হলো অন্যতম প্রধান দেশ। তাই বন্যা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। সিলেটের বন্যাদুর্গতদের পাশে সরকার দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বন্যা দুর্গত এলাকা সফর করেছেন, মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলেই জানা গেছে। আর একারণেই বন্যার সঙ্গে পদ্মা সেতুকে মুখোমুখি করানোর কোনো কারণ থাকতে পারেনা বলেই বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। কারণ দুটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়।

পদ্মা সেতু দীর্ঘদিনের বাঙালির একটি ত্যাগ-তিতিক্ষার অর্জন। পদ্মা সেতু নিয়ে নানারকম ষড়যন্ত্র হয়েছে, পদ্মা সেতু যেন না হয় সেজন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নানারকম রাজনীতি হয়েছে। সব বাধা পেরিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। এ নিয়ে উৎসব হবেই। এর সঙ্গে বন্যার কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশে কিছু কিছু মানুষ আছে, সবকিছুর মধ্যেই একটা বাগড়া দেওয়ার কৌশল খোঁজে। যারা বন্যার কারণে পদ্মা সেতুর উৎসব করা উচিত নয় বলছেন তারা চিহ্নিত এবং তাদের পরিচয় দেশবাসী আগে থেকেই জানে। বিভিন্ন সময়ে যারা পদ্মা সেতু হবে না, এই সরকারের আমলে পদ্মা সেতু করা যাবে না কিংবা বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পরিণতি বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ হবে ইত্যাদি কথা বলেছিল, তারাই এখন বন্যার অজুহাত দেখিয়ে পদ্মা সেতুর উৎসবকে ম্লান করতে চাইছে। কিন্তু দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গকে পরস্পর মুখোমুখি করার উদ্দেশ্য কি, সেটি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ মনে করে যে, যাই ঘটুক না কেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা উৎসব।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭