ইনসাইড বাংলাদেশ

পদ্মা সেতুতে যত রেকর্ড


প্রকাশ: 24/06/2022


Thumbnail

পানি প্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে আমাজন নদীর পরই পদ্মা অবস্থান। এই রকমের একটি খরস্রোতা নদীতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করতে পারাটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য গর্বের। এ সেতু কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশ্বেরেকর্ড গড়েছে। সেতু বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

গভীরতম পাইল: খরস্রোতা পদ্মা নদীতে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু। পানি প্রবাহের কথা বিবেচনা করলে বিশ্বে আমাজন নদীর পরই এই নদীর অবস্থান। মাটির ১২০ থেকে ১২৭ মিটার গভীরে গিয়ে পাইল বসানো হয়েছে এই সেতুতে। পৃথিবীর অন্য কোনো সেতু তৈরিতে এত গভীরে গিয়ে পাইল প্রবেশ করাতে হয়নি। যা পৃথিবীতে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

বিয়ারিংয়ের ব্যবহার: দ্বিতীয় রেকর্ডটি হলো ভূমিকম্পের বিয়ারিং সংক্রান্ত। এই সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’ এর সক্ষমতা ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার মতো করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

এর পরের বিশ্বরেকর্ড হলো পিলার এবং স্প্যানের মধ্যে যে বিয়ারিং থাকে সেটি। এখানে ১০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ওজনের একেকটি বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীতে এর আগে কোনো সেতুতে এমন বড় বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়নি।

সব থেকে বড় ক্রেন ব্যবহার: সেতু নির্মাণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেন ব্যবহার করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে পদ্মা সেতু। পিলারের ওপর স্প্যান বসাতে যে ক্রেনটি ব্যবহৃত হয়েছে সেটি আনা হয়েছে চীন থেকে। প্রতি মাসে এর ভাড়া বাবদ গুনতে হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছরে মোট খরচ হয়েছে ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বিশ্বে প্রথম কোনো সেতু তৈরিতে এত দীর্ঘদিন ক্রেনটি ভাড়ায় থেকেছে। এই ক্রেনটির দাম দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

কংক্রিট ও স্টিলের ব্যবহার: পদ্মা সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল উভয়ই ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্বে আর কোনো সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়নি। অর্থাৎ সেতুগুলো হয় কংক্রিটে নির্মিত, নাহয় স্টিলের।

সেতু রক্ষায় নদীশাসন: অন্য রেকর্ডটি হলো নদীশাসন সংক্রান্ত। ১৪ কিলোমিটার (১.৬ কিলোমিটার মাওয়া প্রান্তে ও ১২.৪ কিলোমিটার জাজিরা প্রান্তে) এলাকা নদীশাসনের আওতায় আনা হয়েছে। এই নদীশাসনে খরচ হয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি। পদ্মা সেতু প্রকল্প তিন জেলায় বিস্তৃত। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া, শরীয়তপুরের জাজিরা এবং মাদারীরপুরের শিবচর। ভাঙনসহ নানা কারণে পদ্মা সেতু যাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্যই নদীশাসন করা হচ্ছে। আট হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু বিশ্বে কয়েকটি বিষয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সেটা হলো গভীরতম পাইল হয়েছে পদ্মায়। কারণ পদ্মার মতো এত খরস্রোতা নদী পৃথিবীর বুকে নেই বললেই চলে। আমরা ভূমিকম্প মোকাবিলায় যে বিয়ারিং ব্যবহার করেছি এটা পৃথিবীতে একটা রেকর্ড। এত বড় বিয়ারিং আগে কোথাও ব্যবহার করা হয়নি। এটা প্রায় ১০ হাজার টনের কাছাকাছি। আরও একটা আছে নদীশাসন। সেতুর জন্য ১৪ কিলোমিটার নদীশাসন আর কোথাও নেই। এত গভীরে আর নদীশাসনও কোথাও হয়নি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭