ইনসাইড টক

'পদ্মা পাড়ের মানুষকে পদ্মা সেতু নতুনভাবে বাঁচতে স্বপ্ন দেখাবে'


প্রকাশ: 24/06/2022


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, পদ্মা সেতুর আশেপাশের যে অঞ্চলগুলো আছে, আমরা যেগুলোকে পদ্মা সেতুর বিশেষ সুবিধাভোগী বলে থাকি, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওই ২১টি জেলার মধ্যে ১৩টি জেলা একেবারে দরিদ্র্য জেলা। বাংলাদেশের দরিদ্র্য জেলাগুলোর যে তালিকা সেখানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৩টি জেলা আছে। সেখানকার মানুষ যারা চরাঞ্চলের অর্থাৎ যারা সুন্দরবনের আশেপাশে বাস করছেন, যারা প্রতিবছর আইলা বা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যারা মেনেই নিয়েছে যে, তাদের জীবনটা এ রকমই হবে। খোলা আকাশের নিচে কোনো রকম একটা ঘর থাকবে, মাছ ধরবে সেটা বিক্রি করে তারা জীবন চালাবে। কারণ সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে এভাবে সৃষ্টি করেছেন, এভাবেই তাদের থাকতে হবে, এটা তারা মেনেই নিয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতুর হওয়াতে এখন তাদের মানসিক জগতের একটা পরিবর্তন হবে। 

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সাধারণ মানুষের জীবনে পদ্মা সেতু কি ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, ওই এলাকার মানুষের মধ্যে এখন একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে তাদের যে জীবনযাত্রা সেটাই তাদের জীবনযাত্রা না। আগে তারা শাক সবজি উৎপাদন করতো,  হয়তো মাছ ধরতো বা ফুল চাষ করতো, কিংবা ছোট খাটো কৃষিকাজ করতো। এগুলো তাদেরকে বেশিরভাগ সময় চরাঞ্চলেই বিক্রি করতে হতো। আবার যারা মহাজন আছেন তারাও এসব কিনে খুব বেশি লাভবান হতো  না। কারণ পদ্মা পাড়ে তাদের তিন/চার দিন ধরে অপেক্ষা করতে হতো, ৮/১০ মাইল গাড়ির লাইন দাঁড়িয়ে থাকতো, এতে করে বেশির ভাগ সময় প্রায় অর্ধেক কাঁচামালই তাদের পচে যেতো বা নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে গেলে, একটি গ্রামের অতি ক্ষুদ্র কৃষকেরাও একসঙ্গে তাদের উৎপাদিত, পুইঁশাক, করলা বা তাদের ধরা ছোট মাছগুলো ছোট ট্রাকে করে সেটা ২/৩ টনের হতে পারে, এভাবে তারা কিন্তু এখন ঢাকা এনে বিক্রি করে আবার দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে। এই যে নতুন একটা জাগরণ, নতুনভাবে বাঁচতে তাদের স্বপ্ন দেখা বা আশা করা এটাই হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সবচেয়ে বড় অর্জন এবং এটাই হবে সেতুর সবচেয়ে বড় ইতিবাচক প্রভাব। এর ফলে ওই এলাকার পুরো চিত্র বদলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিবার ঈদের সময় দেখি যে, লঞ্চ ডুবে যায়, আগুনে ফেরি পুড়ে যায়, মুর্মূষু রোগী ফেরির মধ্যেই মারা গেছে, এরকম শত শত ঘটনা আছে। কিংবা প্রসূতি মা সময় মতো হাসপাতালে যেতে না পারার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এই রকম হাজারো নীরব কান্না আছে ওই অঞ্চলে। যাদের সাথে এই সমস্ত ঘটনা ঘটেছে তারাই জানে এর কষ্টটা। আমরা হয়তো সেটা সেরকমভাবে উপলদ্ধি করতে পারবো না। যে কারণে আমাদের চেয়ে তারা আরও ভালো বুঝতে পারবে এই সেতু গুরুত্ব কতটুকু।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭