প্রেস ইনসাইড

ভোল পাল্টে তারাও এখন পদ্মা সেতুর প্রেমিক


প্রকাশ: 24/06/2022


Thumbnail

স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর এই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। তার সাহসী দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারণে পদ্মা সেতু আজ বাস্তবতা। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা, অহংকারের প্রতীক। পদ্মা সেতু, বাংলাদেশকে যারা অপমান করেছিল, যারা বাংলাদেশকে দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্র হিসেবে চিত্রিত করেছিল তাদের বিরুদ্ধে একটি উজ্জ্বল প্রতিবাদ। কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে যখন বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলো এবং বিশ্বব্যাংকের এই অভিযোগকে বিভিন্ন মহল যে সমর্থন করেছিলো, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলো দেশের সংস্কারপন্থী দুই পত্রিকা- প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার।

২০১২ সালের ২৯ জুন বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ঋণচুক্তি বাতিল করে। বিশ্বব্যাংক যে বাংলাদেশের ঋণচুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে, এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রথম প্রকাশ করে প্রথম আলো। ডেইলি স্টারে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কথিত যে গল্প সেই গল্প নিয়ে অন্তত তিনটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। অথচ সেই সময় তারা কখনোই বলেনি যে, এই অভিযোগ অসত্য। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের একের পর এক যে পদক্ষেপ, প্রত্যেকটা পদক্ষেপে বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর পক্ষে ছিলো ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো। এ নিয়ে ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখ্য যে, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে আসার পর বিশ্বব্যাংক আবার ফিরে এসেছিলো। ড. গওহর রিজভীর উদ্যোগের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে শর্তসাপেক্ষে ফিরে আসে এবং সেই সময় দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। বিশ্বব্যাংক থেকে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসে। তাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করতে চায়।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বিশ্বব্যাংকের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার পর মাত্র দু'জন সম্পাদকের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এদের মধ্যে একজন ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, অন্যজন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। এই দুইজনের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা দুর্নীতি দমন কমিশনে যায়। ওই সময় প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকাগুলো দেখলে দেখা যাবে, তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের প্রতিবেদনগুলোতে বোঝাতে চেষ্টা করেছে যে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে এবং এই দুর্নীতির সঙ্গে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বা অন্যরা জড়িত। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পুরোপুরিভাবে সে সময় বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো।

ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোর ওই সময়ের প্রতিবেদন গুলোর দিকে তাকালেই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়ে যায় যে, পদ্মা সেতু নিয়ে তথাকথিত বিশ্বব্যাংকের বানোয়াট অভিযোগকে মৌন সমর্থন দিয়েছিলো এই দুইটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! এখন এই দুটি পত্রিকা পদ্মা সেতু নিয়ে একের পর এক ইতিবাচক প্রতিবেদন লিখছে। পদ্মা সেতুর আদ্যোপান্ত, পদ্মা সেতু স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক করিডোরের ইত্যাদি নানা প্রতিবেদন প্রতিদিন প্রকাশ করছে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী যারা যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিলো তাদের নাম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন। কিন্তু এই বিরোধিতাকে উস্কে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলো যে দুটি পত্রিকা, সে ব্যাপারে তিনি অবশ্য কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু প্রথম আলো-ডেইলি স্টার ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকার পর যেভাবে ইউটার্ন নিয়েছিল, ডিগবাজি খেয়েছিলো, পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে ঠিক একই কাণ্ড ঘটালো। তাহলে বারবার ভোল পাল্টানোই কি এই সংস্কারপন্থী পত্রিকা দুটির একমাত্র কাজ?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭