ইনসাইড পলিটিক্স

যে সেতু বদলে দিলো কাদেরের ভাগ্য


প্রকাশ: 25/06/2022


Thumbnail

পদ্মা সেতু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো। সেতু বিভাগের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের জন্য এটি এক বিশাল অর্জন। আজ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে মঞ্চে যে দুজন বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের একজন। তিনি শুধু বক্তৃতায় বক্তব্যই রাখেননি, এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন ওবায়দুল কাদের। পদ্মা সেতু ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের একটি বিশাল অর্জন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পদ্মা সেতুর কারণে ওবায়দুল কাদের তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নতুন জীবন পেয়েছেন বলেও অনেকে মনে করছেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। বরং ওয়ান ইলেভেনের সময় সামরিকজান্তাদের কাছে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের মধ্যে নানারকম সমালোচনার মুখে ছিলেন। এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই চলছিল। কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে যখন বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ উত্থাপিত হলো, তখন শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার পরিবর্তন আনেন। সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এই সময়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। একটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, অন্যটি রেল মন্ত্রণালয়। রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে, আর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে।

ওবায়দুল কাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিলো সবকিছু বিতর্ক পাশ কাটিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ঘোষণা করেছিলেন যে, নিজের টাকায় তিনি পদ্মা সেতু করবেন তখন এটি দেখভাল করার জন্য একজন ভালো দক্ষ ম্যানেজার দরকার ছিলো। ওবায়দুল কাদের দক্ষতার সঙ্গেই পদ্মা সেতুর সম্পন্ন করার দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বারবার তিনি সেতু এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পদ্মা সেতুর সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে তাঁর একাগ্রতা, নিষ্ঠা প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই মনে করেন এই কারণেই তিনি রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির আরও নজরে এসেছেন। এ কারণেই তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এবং এই পদ্মা সেতুর সাফল্যই হয়তো তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদেরকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ওবায়দুল কাদের নিঃসন্দেহে একজন ত্যাগী-পরীক্ষিত নেতা। পচাঁত্তর পরবর্তী কঠিন সময়ে তিনি ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জেল-জুলুম, নির্যাতন ভোগ করেছেন। তারপর ধাপে ধাপে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে এসেছেন। কিন্তু পদ্মা সেতু তার রাজনৈতিক জীবনে নতুন প্রাণ দিয়েছে, দিয়েছে নতুন মাত্রা। তার মন্ত্রিত্ব অবস্থায় পদ্মা সেতু হয়েছে। এটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম অর্জন। আর যতদিন পদ্মা সেতু থাকবে ততদিন তার আমলেই পদ্মা হয়েছে এই কথাটি থাকবে। পদ্মা সেতু তার অনেক ব্যর্থতাও ছাপিয়ে দিয়েছে এবং সংগঠন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে তার যে সীমাবদ্ধতাগুলো, সেই সীমাবদ্ধতাগুলোকেও চাপা দিয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পদ্মা সেতুর কারণে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন, পদ্মা সেতুর কারণেই রাজনীতিতে তার অবস্থান আগের চেয়ে এখন আরও শক্ত হলো বলে মনে করা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭