কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা সিভিডি, বিশ্বব্যাপী ৩২ শতাংশ মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এই হৃদরোগ। শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই দেড় কোটিরও বেশি মানুষ হৃদরোগের কারণে মারা যায়। যার মাঝে ৮৫ ভাগ মৃত্যুর কারণই ছিলো হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক।
বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর এই ব্যধির চিকিৎসা থাকলেও তা যথেষ্ট জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। প্রায় প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ ভুগছেন এই কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে। হার্টে ব্লক ধরা পড়া রোগীর জন্য সার্জিক্যাল পদ্ধতিতে চিকিৎসা অত্যান্ত কষ্টসাধ্য।
তবে বর্তমানে সার্জিক্যাল কোনো ট্রিটমেন্ট ছাড়া দেশেই হৃদরোগের চিকিৎসা সম্ভব। এমনটাই সম্ভব করেছে বিশ্বের বৃহত্তম নন-সার্জিক্যাল চেইন হার্ট কেয়ার ও লাইফস্টাইল প্রতিষ্ঠান সাওল হার্ট সেন্টার (বিডি) লি.
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম নন সার্জিক্যাল পদ্ধতিতে হৃদরোগের চিকিৎসার প্রচলন করেন স্বাস্থ্য আন্দোলনের পথিকৃৎ মোহন রায়হান। যিনি বর্তমানে সাওল হার্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাওল হার্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা মহোন রায়হানের সাথে বাংলা ইনসাইডারের আলাপচারিতায় তিনি তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বাংলা ইনসাইডারকে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, 'আমরা অপারেশনের বিপরীতে ইমিডিয়েট ট্রিটমেন্ট করছি নেচারাল বাইপাস (ইইসিপি) ও কার্ডিয়াক ডিটক্স।
অপরদিকে স্থায়ী ট্রিটমেন্ট হিসেবে লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে দেওয়া'।
চলুন তাহলে উপরের চিকিৎসা পদ্ধি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
*নেচারাল বাইপাস (ইইসিপি)
নেচারাল বাইপাস সর্বাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণিত উপায় ও প্রায় শতভাগ সফল হৃদরোগ চিকিৎসা পদ্ধতি। ইইসিপি মেশিনে ৩৫-৫০ ঘণ্টা থেরাপির মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড-রক্তনালীর ব্লকের আশ-পাশের অব্যবহৃত সুপ্ত নালী সক্রিয় হয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ ব্লকটি বাইপাস হয়ে যায়, কোনো কাঁটা-ছেঁড়া করতে হয় না। এ বাইপাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে। তবে থেরাপি শুরুর প্রথম সপ্তাহ থেকেই রোগী অপেক্ষাকৃত সুস্থবোধ করেন।
*কার্ডিয়াক ডিটক্স
একটি জৈব-রাসায়নিক মিশ্রণ, যা স্যালাইন গ্রহণের মতন রক্তনালীতে প্রবেশ করে নালীর ব্লকেজ কমিয়ে দেয়। এই রসায়নের মাত্রা কেবল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নির্ধারণ করেন। যা রোগীভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। এ চিকিৎসা ব্যবস্থায় ২০-৩০টি ডোজ ৪০-৬০ দিনের সময়সীমায় দেওয়া হয়।
অন্যদিকে স্থায়ী ট্রিটমেন্ট হিসেবে লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা।
*মর্ডান মেডিকেল সাইন্সের মাধ্যমে পরিক্ষা নীরিক্ষা করে খাওয়া দাওয়া চার্ট তৈরি করে দেওয়া হয়। তবে খাদ্যের চার্ট ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। যে তালিকার মধ্যে রয়েছে তেল ছাড়া খাবার, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, কম মসলা দেওয়া খাবার খাওয়া এবং সঠিক সময় ঘুমানো ইত্যাদি।
এছাড়াও হৃদরোগের ১৫টি কারণের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মানসিক চাপ। এই বস্তুতান্ত্রিক জগত ও যান্ত্রিক জীবনে প্রত্যেক মানুষের রয়েছে কম-বেশি মানসিক চাপ বা টেনশন। সাওল হার্ট সেন্টারে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ইয়োগা মেডিটেশন বিশেষজ্ঞ দ্বারা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।