এডিটর’স মাইন্ড

মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে নতুন গুঞ্জন


প্রকাশ: 01/07/2022


Thumbnail

গতকাল জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। আজ নতুন অর্থবছর শুরু হলো। বাজেট পাস হওয়ার পরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে নতুন গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নির্বাচনের দেড় বছর আগে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভাকে আরো শক্তিশালী করতে চান এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে মন্ত্রিসভায় আনতে চান, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আলোচনায় মন্ত্রিসভার রদবদলের বিষয়টি আবার সামনে চলে এসেছে। অবশ্য মন্ত্রিসভার এই রদবদলের গুঞ্জন নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সময় মন্ত্রিসভার রদবদলের কথা শোনা গেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বড় কোন রদবদল হয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ২০১৯ সালে মন্ত্রিসভা গঠন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠনে চমক দেখান। দলের হেভিওয়েট সিনিয়র নেতাদেরকে বাদ দিয়ে একেবারে তরুণ এবং আনকোরাদের দিয়ে এই মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিলো। এমনকি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছিলেন দলের দুঃসময়ের সাথী হিসেবে পরিচিত বেগম মতিয়া চৌধুরীর মতো সৎ রাজনীতিবিদও। তবে ২০১৯ সালের গঠিত মন্ত্রিসভা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি জনগণের, এমনকি আওয়ামী লীগের। মন্ত্রিসভার ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। অনেকে মনে করেন যে, শেখ হাসিনা একাই আসলে সবকিছু সামাল দিচ্ছেন। মন্ত্রীদের অধিকাংশই ইতিবাচক কোনো কাজ তো করছেনই না বরং তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করছেন। তাদের ব্যর্থতার কারণে সরকার সমালোচিত হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে প্রতি ৬ মাস পরপরই মন্ত্রিসভায় রদবদল দিয়ে নানা রকম আলোচনা এবং গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু কখনোই মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল হয় না।

প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন করেছেন কয়েকদফা। একবার তিনি মন্ত্রিসভার দফতর পরিবর্তন করেন। সেসময় তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমকে সরিয়ে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং আরও দুই একজন মন্ত্রীর দপ্তর সুনির্দিষ্টকরণ করেছিলেন। এরপর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মৃত্যুবরণ করলে সেই জায়গায় নতুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দেয়া হয়। ড. শামসুল আলমের চাকরির মেয়াদ শেষ হলে তাকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। এর বাইরে মন্ত্রিসভার বড় ধরনের রদবদল হয়নি। বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বেশকিছু মন্ত্রীর ব্যর্থতার অভিযোগ এসেছে এবং আওয়ামী লীগের মধ্যেই রদবদলের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে পথে হাঁটেননি।

মন্ত্রিসভার রদবদল একান্তই প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী যখন যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে মন্ত্রিসভার পরিবর্তন করতে পারেন। তবে তিনি মন্ত্রিসভার বড় ধরনের পরিবর্তন করেননি এখন পর্যন্ত। তবে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে মন্ত্রিসভা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে তীব্র। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে একটি সচল মন্ত্রিসভা দরকার। মন্ত্রিসভায় রাজনৈতিক পরিচিত মুখদের অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। অনেকেই বর্তমান মন্ত্রিসভাকে একটি টেকনোক্র্যাট মন্ত্রিসভা মনে করেন। যে সমস্ত মন্ত্রীরা আছেন তাদের অধিকাংশেরই কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেই এবং রাজনৈতিক বিষয়ে তারা কথাবার্তা বলেন না। এ কারণেই বাজেট পাস হওয়ার পরপরই নতুন করে মন্ত্রিসভার রদবদলের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং বাজেট পাস করার পর অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী হয়তো মন্ত্রিসভায় একটি রদবদল করবেন। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এগুলো শুধু আকাঙ্ক্ষার কথা। মন্ত্রিসভায় রদবদল আদৌ হবে কিনা, সেটি প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ারাধীন বিষয় এবং তিনি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, অন্য কেউ নয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭