ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেনের লিসিচানস্ক শহর দখলে নেয়ার দাবি রাশিয়ার


প্রকাশ: 03/07/2022


Thumbnail

টানা চার মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া।  এই লড়াইয়ে সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় শহর সেভেরোদোনেতস্কের দখল নেয় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আর এবার লুহানস্ক তথা ডনবাসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লিসিচানস্কের দখল নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। এছাড়া রাশিয়ার হাতে শহরটির পতন হয়ে থাকতে পারে বলে স্বীকারও করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টা। রোববার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

লিসিচানস্ক শহরটি ছিল লুহানস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনীয়-নিয়ন্ত্রিত শেষ শহর। এই শহরটি মূলত ডনবাসের শিল্পাঞ্চলীয় এলাকার অংশ। এর আগে রাশিয়া গত মাসে নিকটবর্তী শহর সেভেরোদোনেতস্ক দখল করে।

অন্যদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রুশ বাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় শহর লিসিচানস্ক দখলের কথা জানালেও ইউক্রেনীয় বাহিনীর দাবি, এই শহরটির নিয়ন্ত্রণ তারা এখনও ধরে রেখেছে। ইউক্রেন বলছে, তাদের বাহিনী সেখানে তীব্র রুশ গোলাবর্ষণের মধ্যে থাকলেও তারা বেশ জোর দিয়েই বলছে যে, লিসিচানস্ক শহরটি দখল করা হয়নি।

তবে রাশিয়ান সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলছেন, তারা সফলভাবে শহরে প্রবেশ করেছে এবং এমনকি ইতোমধ্যেই শহরের কেন্দ্রে পৌঁছেছে। রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম লিসিচানস্ক শহরের রাস্তার মধ্য দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা রাশিয়ান বাহিনীর কুচকাওয়াজের ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এছাড়া রাশিয়ার বিভিন্ন সূত্র শহরের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কেন্দ্রে সোভিয়েত পতাকা রাখার একটি ভিডিও টুইট করেছে। তবে তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি হাইদা বলেছেন, রুশ বাহিনী চারদিক থেকে অবরুদ্ধ শহরটির দিকে এগিয়ে আসার কারণে লিসিচানস্কে হামলায় আর কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।

মস্কোপন্থি লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের রুশ রাষ্ট্রদূত রডিয়ন মিরোশনিক রাশিয়ান টেলিভিশনকে বলেছেন, "লিসিচানস্ককে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে’ কিন্তু ‘এখনও মুক্ত করা হয়নি।" এছাড়া প্রতিরক্ষা বিষয়ক ব্লগার রব লি লিসিচানস্ক শহরের ভেতরে চেচেন রাশিয়ান সৈন্যদের অবস্থানের ছবি শেয়ার করেছেন।

রয়টার্স বলছে, রাশিয়ান মিডিয়া লিসিচানস্কের রাস্তায় লুহানস্ক মিলিশিয়ার সদস্যদের কুচকাওয়াজের ভিডিও সামনে এনেছে। এসব ভিডিওতে তাদেরকে পতাকা নেড়ে উল্লাস করতে দেখা যায়। কিন্তু ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের মুখপাত্র রুসলান মুজিচুক ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, শহরটি এখনও ইউক্রেনের হাতে রয়েছে।

তার দাবি, "এখন লিসিচানস্কের কাছে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ চলছে, তবে ভাগ্যক্রমে, শহরটি এখনও অবরুদ্ধ নয় এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।"

রয়টার্স অবশ্য তার এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী অবশেষে সিভারস্কি দোনেতস নদী অতিক্রম করেছে এবং উত্তর দিক থেকে শহরের দিকে আসছে।

তিনি জানান, "এটি আসলেই একটি হুমকি। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আমি এখানে সম্ভাব্য কয়েকটি ফলাফলের একটিকেও বাতিল করছি না। দু-এক দিনের মধ্যে বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।" 

আরেস্টোভিচ বলেন, যাইহোক লিসিচানস্ক শহরের দখল নেওয়া রাশিয়ানদের জন্য কৌশলগতভাবে বিষয়গুলোকে জটিল করে তুলবে। কারণ এখন থেকে তাদেরকে শিল্পোন্নত পূর্ব ডনবাস অঞ্চলের ছয়টি প্রধান শহরের ওপর ফোকাস করতে হবে। তাদের বাহিনীকে আরও পাতলা করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, "পশ্চিমা অস্ত্র যত বেশি সামনে আসবে, ইউক্রেনের পক্ষের দৃশ্য তত বেশি বদলে যাবে।" 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭