ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রথম আলোর চাপে থমকে আছে নাইমুল আবরার হত্যা মামলা


প্রকাশ: 04/07/2022


Thumbnail

নাইমুল আবরার রাহাত। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। প্রথম আলোর এক অনুষ্ঠানের দায়িত্বহীনতার জন্য মৃত্যুবরণ করেন নাইমুল আবরার। এটি আসলে মৃত্যু না, রীতিমত হত্যাকাণ্ড ছিল। প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে লাশ হয়ে ফেরেন নাইমুল আবরার। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনি ঘটায় প্রথম আলো নিয়ন্ত্রিত কিশোর আলো। এই ঘটনার পর প্রথম আলো বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টাও করে। মামলা না করার জন্য নাইমুল আবরারের পিতা মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন রকম চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু মুজিবুর রহমান তার পুত্রের হত্যার বিচারের দাবিতে অনড় থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করে। 

মতিউর রহমান ছাড়াও এই হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, শাহপরান তুষার, মহিতুল আলম পাভেল, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, মোহাম্মদ সুজন, কামরুল হায়দার। মামলার চার্জশিট হওয়ার পর মতিউর রহমানদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। কিন্তু মতিউর রহমানরা হাইকোর্টে গিয়ে আগাম জামিন নেন। এরপর ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে আবরারের পিতা আপিল বিভাগে গেলে ২২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী কোনো আদেশ দেননি। ফলে হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকে। সেই থেকে মামলাটি হিমাগারেই পড়ে আছে। এর মধ্যে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রথম আলো চেষ্টা করছে। 

প্রথম আলোর প্রভাবের কারণে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ বেড়েই যাচ্ছে। এই মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। নাইমুল আবরার রাহাতের পিতা মুজিবুর রহমান এখন তার পুত্রের হত্যার বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু তিনি কোন কূলকিনারা পাচ্ছেন না। অসহায় এই পিতার পাশে কেউ নেই। উপরন্ত প্রথম আলো তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানারকম চাপ এবং হুমকি দিচ্ছে। হাইকোর্টে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য চেষ্টা তদবির করেও নাইমুল আবরার রাহাতের পিতা কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না। তিনি বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে, আমি আমার পুত্রের হত্যার বিচার চাই। আর এই বিচার চাওয়ার জন্য আমি সবকিছু করছি। কিন্তু প্রথম আলো গোষ্ঠী এত প্রভাবশালী যে আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। নাইমুল আবরার রাহাতের পিতা মুজিবুর রহমান বলছেন যে, হাইকোর্টের অবকাশ শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই তিনি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবার আবেদন করবেন। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চান। 

উল্লেখ্য যে, প্রথম আলো নিয়ন্ত্রিত কিশোর আলো পত্রিকার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যেয়ে, নির্মমভাবে মারা যান নাইমুল আবরার রাহাত। এই ঘটনার পর সারাদেশে তোলপাড় পড়ে। কিন্তু সুশীল সমাজ অন্যান্য বিষয় নিয়ে সরব হলেও নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যু নিয়ে কোনোরকম উচ্চবাচ্য করেনি। বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাও হচ্ছে না। এটি নিয়ে নিহত নাইমুল আবরারের পরিবারের মধ্যে এক ধরনের হতাশা নেমে এসেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭