একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, কারাবন্দী হেফাজত নেতাদের মুক্তি চেয়ে হেফাজতে ইসলাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যে চিঠি দিয়ে সেটা চরিত্রগত দিক থেকে মুচলেকার নামান্তর। কিন্তু এখানে মুচলেকার কোনো বিষয় নেই। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। কোনো রাজনৈতিক কারণে তাদের গেফতার করা হয়নি। যদি রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হতো, তাহলে তারা মুচলেকা দিয়ে মুক্তির দাবি করতে পারতো। কিন্তু তাদের বেলায় সেটা না। কারণ তারা সরকার, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তারা মুচলেকা দিয়েছে যে, তারা সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করবে না। কিন্তু হেফাজত ইসলাম তাদের ১৩ দফা দাবি প্রত্যাহার করছে না। তাদের দেওয়া ১৩ দফা মানতে গেলে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ থাকবে না। তারা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলছে, শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে চায় হেফাজত ইসলাম। শিক্ষা ব্যবস্থায় তারা তাদের চিন্তার প্রতিফলন করতে করতে যেটা দেশের চেতনার পরিপন্থী।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার বিব্রত হয়, এমন কিছু করবে না, প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারাবন্দী নেতাদের জামিন চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ সংগঠনটি। এ বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেন। পাঠকদের জন্য শাহরিয়ার কবির এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।
শাহরিয়ার কবির বলেন, হেফাজত যদি বাংলাদেশের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাজনীতি করে, তাহলে তাদের মুচলেকার ব্যাপারে সরকার বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু তারা তো সেটা করছে না বা করবে বলেও তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো আলামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তারা প্রকাশ্য দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করুক যে, তারা তাদের ১৩ দফা দফা থেকে সরে এসেছে এবং বাংলাদেশের চেতনায় বিশ্বাসী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে কোর্ট। এখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর করার কোনো এখতিয়ার নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তারা অপরাধ করেননি, করেছেন আইনের কাছে। আইনগত দিক থেকে মামলা প্রত্যাহার করা কিংবা তাদের জামিন দেওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা সরকারের এখতিয়ার নেই। এটা করার জন্য আদালত আছে, আইন আছে। আদালতের কাজ আদালতকে করতে দেওয়া উচিত, আইনের প্রতি আমাদের সবার শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। সরকার আলাদা করে হেফাজতের নেতাদের ক্ষেত্রে কিছু করতে পারে না, যদি না তারা মনে করে কোর্ট তাদের অধীনে।