ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর সাহসী উচ্চারণ: বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক


প্রকাশ: 07/07/2022


Thumbnail

প্রায় গত এক বছর ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়সহ মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি নিয়ে বেশ সোচ্চার। এমন প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর র‍্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পাশাপাশি গণতন্ত্রের সম্মেলনেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলাদেশকে। এরপর বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস আসেন এবং বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে যাওয়াসহ অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে বেশ সরব রয়েছেন। সব মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভূমিকায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসী উচ্চারণ করেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে সরবরাহ চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সারা বিশ্বের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।  বিশ্বব্যাপী মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে, আরও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই প্রভাবটা শুধু বাংলাদেশে নয়। আমি মনে করি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে সারা বিশ্বই এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমেরিকার যে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে তাতে তাদের দেশের লোকও কষ্ট পাচ্ছে। সেদিকেও তাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, এক দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে বিশ্বের মানুষকে শাস্তি দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তাই এখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরে আসা মনে হয় বাঞ্ছনীয়। আমি মনে করি সবাই সেটাই চাইবে। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো দেশ বা জাতিকে কখনো নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সেটা নিশ্চয়ই এখন দেখতে পাচ্ছেন। তার প্রভাব নিজের দেশের ওপরও পড়ে। কাজেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে পণ্য পরিবহণ সহজ করা একান্ত জরুরি। যুদ্ধ আপনারা করতে থাকেন, কিন্তু পণ্য পরিবহণ আমদানি-রপ্তানি যাতে সহজভাবে হয় আর সাধারণ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষেরই এখনো আস্থার জায়গায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন সম্পর্কে মার্কিনীদের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক রয়ে গেছে। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন সেখানে অন্য দেশের গণতন্ত্র নিয়ে তাদের এমন চিন্তা-ভাবনা নিছকই হাস্যকর। সম্প্রতি এপি-নর্ক সমীক্ষায় বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিন নাগরিক তাদের শাসকদের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। ৮৫ শতাংশ মার্কিন প্রাপ্তবয়স্করা বলেছেন রাজনীতিবিদরা ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং মাত্র ১৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন শাসকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অর্থাৎ মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ জো বাইডেনের ওপর আস্থা রাখছে!

মার্কিনীদের যেখানে এই অবস্থা সেখানে তারা কেন অন্য দেশের গণতন্ত্র, নিষেধাজ্ঞাসহ ইত্যাদি বিষয়ে নাক গলাচ্ছে সেটি একটি বড় প্রশ্ন বটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন এমন ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজকের সাহসী বক্তব্য বিশ্বজুড়ে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে। বঙ্গবন্ধু যেমন জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়েছিলেন, তেমনি শেখ হাসিনাও আজকের এই বক্তব্যের মধ্যে বিশ্বের অসহায়, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কণ্ঠস্বর হলেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন সাহসী বক্তব্যের ফলে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে নতুন করে কোন দিকে যাবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭