ইনসাইড টক

‘গরু মোটাতাজাকরণে ইনজেকশনের ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে’


প্রকাশ: 08/07/2022


Thumbnail

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেছেন, একদিন পরই মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এই উপলক্ষে মানুষ কোরবানি দেওয়া জন্য গবাদি পশু কিনছে। আর এ সময় গরু কেনার জন্য আমাদের বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। যে বিষয় দেখলে আমরা বুঝতে পারবো যে, গরুটি সুস্থ। সুস্থ এবং ভালো গরুর চেনার উপায় হলো যে গরু চঞ্চল, তার চোখ-কান খাড়া, সে অনবরত শরীরের মাছি তাড়াবে। কান দিয়ে তাড়াবে, লেজ দিয়ে তাড়াবে, যখন বিশ্রাম করবে তখন জাবর কাটবে এবং গরুর গোবর স্বাভাবিক থাকবে। আমাদের শরীরে জ্বর হলে যেমন শরীরের লোম খাড়া হয়ে যায় তেমনি গরুর শরীর খারাপ থাকলে তার শরীরের এ ধরনের লক্ষণ দেখা যাবে। তার লোম খাড়া থাকবে, চলাচল কমে আসবে। তখন সে নড়াচড়া করবে না, ঠিক মতো খাবে না, জাবর কাটবে না। তার মধ্যে একটু ঝিমানিভাব থাকবে। একটি সুস্থ গরুর চোখ দিকে পানি পড়বে না।

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির সুস্থ গরু চেনার উপায়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন ড. মো. গোলাম রব্বানী। পাঠকদের জন্য ড. মো. গোলাম রব্বানী এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।

ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, আগে গরুকে মোটাতাজাকরণের জন্য যে ইনজেকশন ব্যবহার করা হতো সেটা এখন আর নেই বললেই চলে। আগে মানুষ এটা দিয়ে বড় ভুল করতো। এটা দিলে পরে গরুর কিডনির ফাংশন কম হতো। কিডনি ফাংশন কম হলে গরুর প্রসাব কমে যেত। আবার প্রসাব কম হলে শরীরে পানি জমে যেত, ফলে সেই গরুর ওজন বেড়ে যেত। এ কারণে গরুকে ফোলা ফোলা দেখাতো। অতীতে কিছু দুষ্কৃতকারী এ ধরনের কাজ করতো। এখন সেগুলো যাতে করে না করা হয় সেজন্য আমাদের ডিপার্টমেন্ট মাঠ পর্যায়ে কাজ করে থাকে। সারাদেশে সকল উপজেলায় আমাদের অফিসে আছে এবং স্টাফও আছে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত। তারা মাঠ পর্যায়ে এ সমস্ত বিষয় দেখাশুনা করে থাকে। কোনো গরুকে কি ধরনের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে সেগুলো তদারকি করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সারাদেশে প্রতিটি হাটে সেটা গ্রামে বা শহরে যেখানেই হোক না কেন, একটি করে ভেটেরিনারি টিম দিয়েছি। যারা বাজারে গরুগুলোকে দেখবে। কোনো গরু সন্দেহজনক হলে সে গরুকে পরীক্ষা করবে। এর পাশাপাশি যেকোনো ক্রেতা আমাদের ভেটেরিনারি টিমের সদস্যদের দিয়ে তার পছন্দের গরুকে পরীক্ষা করতে পারবে। এমনকি যারা বিক্রেতা তারাও এই সুবিধা নিতে পারবে। কারণ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজারে গরু আনা হচ্ছে। এতে করে দীর্ঘযাত্রার ফলে গরু অনেক সময় অসুস্থ হয়ে যায়। কারণ এই সময় তারা ঠিকমতো খেতে পারে না, ঠিকমতো বসতে বা নাড়াচাড়া করতে পারে না। দীর্ঘ সময় ধরে গরু দাঁড়িয়ে থাকে। এসময় পর্যাপ্ত পানিও পান করতে পারে না।  অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেজন্য সবার জন্যই আমাদের ভেটেরিনারি টিমগুলো সাপোর্ট দিয়ে থাকে।

ড. মো. গোলাম রব্বানী বলেন, কিছু কিছু খামারি আছেন, যারা গরুকে সবুজ খাবার দেয়। এই সবুজ খাবার খুব রসালো হয়ে থাকে। গবাদি পশুগুলো এটা খুব মজা করে খায়। এটা দিয়ে সহজে ডাইজেস্ট করা যায়। এতে করে খরচও কম হয়। এর পাশাপাশি খামারিরা দানাদার খাবারও দেয়। যেমন কুড়া, ভুসি, খৈল, ভাত, গমের আঠা এবং ময়দা। যাতে করে গরু হৃষ্টপুষ্ট হয়। অর্থাৎ বাহিরের চাকচিক্য করার জন্য এটা করা হয়। ভেজিটেবল খেলে যেমন মানুষের স্বাস্থ্য ভালো হয় তেমনি গরুকে কার্বো- হাইড্রেড খাবার দিলে একটু রুষ্টপুষ্ট হয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭