ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনা এত সাহসী কিভাবে?


প্রকাশ: 08/07/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা ১৩ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ৪১ বছরের বেশি তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার প্রধানমন্ত্রীত্বকাল ১৭ বছরের বেশি। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় তিনি বাংলাদেশ শুধু নয়, বিশ্বে অন্যতম প্রধান নেতা। তবে বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনা এখন আলোচিত হচ্ছেন তার সাহসের কারণে। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে খোঁজ-খবর রাখেন, এমন সকলেই জানেন যে শেখ হাসিনার অন্যতম শক্তি হলো তার সাহস। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে যখন এসেছিলেন, তখন এক বৈরী পরিবেশ ছিলো। তার জীবননাশেরও শঙ্কা ছিলো সেই সময়। কিন্তু এই প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করেই শেখ হাসিনা সেদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এটি তার সাহসের একটি বড় প্রমাণ। তিনি বাংলাদেশে এসেই এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন। এ সময় তার জীবনের হুমকি ছিলো, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিলো দলের ভেতরে-বাইরে। কিন্তু তারপরও নিজের সাহসের ওপর ভর করে তিনি এগিয়ে গেছেন।

বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, শেখ হাসিনার সাহসী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। বিশেষ করে বিডিআর বিদ্রোহের সময় শেখ হাসিনা যেভাবে ক্যান্টনমেন্টে দরবার হলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তা তাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। শুধু এটি নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে তার জীবনের ওপর যতগুলো ঝুঁকি এসেছে, প্রতিটি ঝুঁকি মোকাবেলা করেছেন তিনি অসীম সাহসে। কখনো তিনি সাহস হারাননি। সাম্প্রতিক সময়ে তার সাহস নতুনভাবে প্রত্যক্ষ করলো বিশ্ববাসী। বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে অস্বীকৃত জানালো তখন শেখ হাসিনার সাহসী উচ্চারণ সবাইকে কিছুটা হলেও চমকে দিয়েছিল। তবে শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু নির্মাণ করলেন তখন তাকে নিয়ে বিশ্ব বন্দনা হচ্ছে। তার সাহসের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে বলে সকলেই একমত। আর সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য সমালোচনা করে তিনি তার সাহসের মাত্রাটা আরেকবার দেখালেন। যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো মার্কিন নীতির ব্যাপারে প্রকাশ্যে কথা বলেন না, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তকে সকলে মেনে নেন, মার্কিন প্রভুত্বকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রায় বিশ্বের সব দেশ স্বীকার করেন, সেই সময় শেখ হাসিনার বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে, সাহস দিয়েছে। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন আনুষ্ঠানিকভাবে। তিনি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমতুল্য হিসেবে উচ্চারণ করেছেন।

প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনার জানেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় প্রভাবশালী দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বলয় সবকিছুর মধ্যে আছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনা সাহস করে সত্যটা বলেছেন। এরকম সাহস এখন বিশ্ব রাজনীতিতে বিরল। তিনি কিভাবে এত সাহসী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন আদর্শ একটু পর্যালোচনা করে দেখতেই হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় শক্তি ছিলো সাহস। তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে তিল তিল করে এগিয়ে গেছেন তার সাহসের উপর ভর করে। সাহসের জন্যই তিনি বাংলাদেশে স্বাধিকারের স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শেখ হাসিনাকে নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন, যারা শেখ হাসিনাকে জানেন তারা জানেন যে বঙ্গবন্ধুর এই সাহসটি তিনি হৃদয়ে ধারণ করেছেন, আত্মস্থ করেছেন। আরেকটি বিষয় হলো, সাহসী মানুষ তারাই হয় যারা সততা এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করেন, যাদের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে সবসময় একটা স্বচ্ছতা থাকে। শেখ হাসিনা তেমনি একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। আর এ কারণেই তিনি জনগণের পক্ষে কোনো কথা বলতে ভয় পান না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ভয় পান না, সত্য উচ্চারণে পিছপা হন না। শেখ হাসিনার সাহস আসলে তার সততার ফসল।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭