ইনসাইড বাংলাদেশ

হঠাৎ কেন বিদ্যুৎ সংকট?


প্রকাশ: 09/07/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে হঠাৎ করেই দেখা দিচ্ছে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট। করোনার ধাক্কা পুরোপুরি সামলে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পুরো বিশ্বকেই একটি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। আর এর প্রভাবের বাইরে নেই বাংলাদেশেও। দেশে হঠাৎ করে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎ সংকট এখন সকলের কাছেই দৃশ্যমান। হঠাৎ করে সৃষ্টি সংকট সরকারকে বেশ অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে। তবে আচমকা তৈরি এ বিদ্যুৎ সংকটের কারণ কি?

বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের সিংহভাগ তৈরি হয় লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) থেকে। যা মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৬২.৯%। তবে বর্তমানে বিশ্বে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাসের বাজার বেশ উত্তাল। ২০২১ সালের শেষের দিক থেকে এলএনজির দাম বিশ্ব বাজারে বারবার নতুন রেকর্ড গড়েছে, যার জন্য দায়ী ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন।

ইউরোপে সবচেয়ে বড় এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পর ইউরোপ সহ বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার উপর নিশেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং রাশিয়াকে চাপে ফেলার জন্য রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে দেয় যার ফলে সীমিত বাজারে এলএনজির চাহিদা এবং দাম দুটোই অনেক বেড়ে যায়।  

অক্টোবর ২০২১ থেকে, বাংলাদেশ প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি কিনেছে ৩০-৩৭ মার্কিন ডলারে। এই দামে, প্রতি শিপমেন্টের খরচ হতে পারে ১১০-১৩৫ মিলিয়ন ডলার। যা ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় ৫ গুণ এবং ২০২০ সালের মে মাসের খরচের ১০ গুণ। যা শুধু বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশেই নয় অনেক উন্নত দেশের জন্যও অনেক বেশি ব্যায়বহুল।

পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তার মতে, ২০২২ সালের জুন নাগাদ এলএনজি আমদানি বিল ৪০,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আগের অর্থবছরের দ্বিগুণেরও বেশি।

২০১৮ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ার পর থেকে, উচ্চ খরচের সাথে সাথে সরকারের ভর্তুকির বোঝাও বেড়েছে। সরকার ২০২২ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া পরবর্তী অর্থবছরের জন্য ৮২,৭৪৫ কোটি টাকার (৯.৪ বিলিয়ন ডলার) একটি ভর্তুকি প্যাকেজ প্রস্তুত করেছে, যার বৃহত্তম অংশ বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী আমদানিতে খরচ হচ্ছে। যা ২০২১ সালের ভর্তুকি ব্যয় থেকে প্রায় ৫৪% বেশি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সরকারি ভর্তুকির এ বোঝা প্রত্যাশিত তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা এবং এর ফলে এলএনজির বাজারও থাকবে অস্থিতিশীল। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, বিপণিবিতান, দোকানপাট, অফিস-আদালত এবং বাড়িঘরে আলোকসজ্জা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঠিক সময়ে মিতব্যয়ী না হলে হয়ত আরও বড় বিপদএর মুখে পরতে হতে পারে সবাইকে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭