যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। করোনার দুই বছর পর দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে আনন্দের এই উৎসব উদযাপন করছে করোনার আরেক ঢেউয়ের শঙ্কার মূখে। বর্তমান দেশব্যাপী সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও সামনের দিনগুলো নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা রয়েছে সবার মাঝে। দেশের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সরকারের মধ্যেও এই শঙ্কা এবং অস্বস্তি রয়েছে।
গত মাসের মাঝামাঝি সময় হঠাৎ বন্যায় প্লাবিত হয় সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ সময় ভারতের আসাম-মেঘালয়ে রেকর্ড বৃষ্টি সিলেট অঞ্চলে সৃষ্টি করেছিল স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির। যত দ্রুত বন্যার পানিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ প্লাবিত হয়েছিল তত তাড়াতাড়ি কমেনি বন্যার পানি। ফলে বন্যার ক্ষতির পরিমাণও প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার। অনেক বাড়িঘর বন্যায় ভেসে যায়। সিলেট ও সুনামগঞ্জবাসী এখন অপেক্ষার প্রহর গুণছে পুর্নবাসনের। নতুন করে ঘর বানানোর সামর্থ্যও সবার নেই। আর বন্যা মানুষের সামর্থ্যের অনেকটাই কেড়ে নেয়।
এমন পরিস্থিতির মাঝেই দেশে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ সংকট। গ্রামে গ্রামে দিনে একাধিকবার লম্বা সময় ধরে লোডশেডিংয়ের খবর গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির আরও অবন্নতি হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কৃচ্ছ্বতা নীতি অবলম্বন করার কথা বলেছে। দিয়েছে বেশ কিছু নির্দেশনাও। বিষয়টি সরকারের জন্য যেমন অস্বস্তিকর তেমনি জনগণের জন্য শঙ্কার বটে। কারণ গত ১৩ বছরের দিন দিন দেশের বিদ্যুৎ খাতের যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে করে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। মানুষও বিদ্যুৎ কেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুতের এই সমস্যা শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বব্যাপী বটে। আর এ সংকট তৈরির নেপথ্যে রয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং রাশিয়ার উপর পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা। কবে নাগাদ ইউক্রেন-রাশিয়া বন্ধ হচ্ছে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে সেটাও এখন অনিশ্চিত। ফলে এ ধরনের অস্বস্তি এবং শঙ্কা নিয়েই এবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে।