কালার ইনসাইড

পরীমনির আক্ষেপ


প্রকাশ: 10/07/2022


Thumbnail

ঢাকাই সিনেমার গ্ল্যামার নায়িকা পরীমনি। গেলো বছর তার জীবনে ঘটে গেছে নানা দুর্ঘটনা। তবে থেমে নেই তিনি। সব কিছুকে পিছনে ফেলে নিজ উদ্যমেই কাজ করে যাচ্ছেন। সাজিয়েছেন নতুন সংসার। আর সেই সংসারেও আসছে নতুন অতিথি। তবে সব কিছুর মাঝেও যেন এক আক্ষেপ থেকেই গেছে এই নায়িকার।

২০১৬ থেকে এফডিসিতে নিয়মিত কোরবানি দিতেন পরীমনি। ঈদের দিন আনন্দে মেতে থাকত এফডিসির সবাই। তবে গতবার সেই আনন্দে ছেদ পড়ে। কারণ, কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দেয় এফডিসির ভেতর কোরবানি দেওয়া যাবে না। পরে বাধ্য হয়ে গত বছর (২০২১) এফডিসির বাইরে সড়কের ওপর ৬টি গরু কোরবানি দেন পরীমনি। যথারীতি মাংস বিলিয়ে দেন সিনেমা সংশ্লিষ্ট শিল্পী-কুশলীদের মাঝে। এমনকি এদিন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নায়িকাকে এফডিসি প্রবেশে বাধা দেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা!

নিজের পরিবারের পাশাপাশি এফডিসিকেও নিজের আরেকটি পরিবার ভাবেন হালের এই জনপ্রিয় নায়িকা। তাই দ্বিতীয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বিগত কয়েক বছর ধরে এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছেন। ব্যতিক্রম হলো এবার। সবাই জানেন পরীমনি অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তার অনাগত সন্তানের জন্য। এমন পরিস্থিতিতে এবার ধারাবাহিকতা থেকে বিরত থাকতে হয়েছে তাকে। যার ফলে দ্বিতীয় পরিবারের জন্য এবার আর কোরবানি দেওয়া হলো না নায়িকার। প্রিয় এফডিসিতে কোরবানি না দিতে পারায় মন খারাপ পরীর।

এবার কোরবানি না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে অভিনেত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, গতবার কি এফডিসিতে কোরবান দিতে পেরেছি আমি? আমাকে বাইরে দিতে হলো। অথচ এফডিসির কাক-পক্ষীও জানে প্রতিবছর আমি এই কাজটি কত আনন্দ আর আগ্রহ নিয়ে করি। গতবারও ঈদের অনেক আগেই আমি গরু কিনে এফডিসির সামনে রেখেছি। সেটা সবাই দেখেছে। অথচ ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হলো না আমাকে। টানা পাঁচ বছরের যে সুন্দর কালচার তৈরি করেছি সেটা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো।

এবার প্রিয় এফডিসিতে কোরবানি না দিলেও নিজের পরিবারের জন্য কোরবানি দিয়েছেন পরীমনি। তিনি বলেন, যেমন অন্য আট-দশ জন মানুষ কোরবানি দেয়, এবার আমিও তাই করছি। আমার ছোট সংসার। নানুভাই, রাজ আর আমি। এবার আমরা আমাদের মতো করে ছোট পরিসরে কোরবানি করেছি।

এরপরই পরীর কণ্ঠে ঝরলো অভিমানের সুর। বললেন, ২০১৬ সাল থেকে আমি একরকম শপথই নিয়েছিলাম, যতদিন বেঁচে থাকব এফডিসির অসহায় সহকর্মীদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কোরবানির ঈদটাকে আমি উৎসর্গ করব। সেটা করেছিও টানা ছয় বছর। প্রতিবছর আমার পরিবার বড় হয়েছে, একটি করে গরু বাড়িয়েছি। সর্বশেষ ছয়টি গরু কোরবানি দিয়েছি। এবার সাতটি গরু হওয়ার কথা ছিল। তা তো আর এবার হলো না। আজ ঈদের সারাটা দিন ঘরে বসে থাকলেও মনটা পড়ে রয়েছে এফডিসির ভেতর।

পরীমনির হাত ধরে এফডিসিতে কোরবানি দেওয়ার রীতি চালু হয়। গত বছর চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পক্ষে শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান ও শিল্পী সমিতি কোরবানি দেয়। তার আগের বছর ওমর সানী-মৌসুমী দম্পতি, নিপুণরা এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছিলেন। তবে এবার তারা কেউই কোরবানি দেননি।

এবার এফডিসিতে কেউই কোরবানি দেননি জানতে পেরে বিষণ্ণ পরীমনি। তিনি বলেন, কেউই কোরবানি দিলো না এটা কোনো কথা? শুনে ভীষণ খারাপ লাগছে। গতবার আমাকে দিতে দেয়নি। রাস্তায় দিতে হয়েছিল। সবাইকে এটা মনে করিয়ে দেওয়া উচিত। ভেবেছিলাম এবার কেউ না কেউ দেবে। এফডিসিতে কত সমিতি এখন। দেওয়ার মানুষের তো অভাব নেই। তারপরও নিম্ন আয়ের এই মানুষগুলোর কথা ভাবার কেউই নেই? আমি শুরু করার পর থেকে কি সুন্দর করে এতগুলো বছর চলছিল।

যোগ করে তিনি আরও বলেন, এবার কারো না দেয়াতো পরিষ্কার হয়ে গেল মূলত, তাদের পরীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা। যদি আগেভাগে বুঝতে পারতাম কেউই কোরবানি দেবে না তাহলে অবশ্যই এবার দিতাম। তবে সবার বোঝা উচিত যে, আমি সবসময় মন থেকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে তাদের জন্য কোরবানি দিয়েছি। অন্য অনেকের মতো আমি স্বার্থের জন্য কোরবানি দেইনি। অসহায় মানুষগুলোর কথা ভেবে খুব কষ্ট লাগছে। কত আনন্দ করতাম এই দিনে। ভীষণ মিস করছি সেই আনন্দ। বেঁচে থাকলে আগামী বছর আবার কোরবানি দেব, ইনশাআল্লাহ। আগামীতে আবারও এফডিসি আনন্দে মাতবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭