ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ার প্রত্যক্ষ কিন্তু আমেরিকার পরোক্ষ যুদ্ধ


প্রকাশ: 12/07/2022


Thumbnail

বর্তমান বিশ্ব বহুমাত্রিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালের যেসব সংকট নতুন করে শুরু হয়েছে তার মূলে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ তারই পরোক্ষ মদদের ফলাফল। আর এর ফলেই এশিয়া এবং ইউরোপজুড়ে শুরু হয়েছে নানামাত্রিক সংকট। এই যুদ্ধের ফলে রাশিয়াকে ইউরোপ থেকে বানিজ্যিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সে কথা সবারই জানা।  
রাশিয়া আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ, প্রচুর তেল, গ্যাস ও জ্বালানী সহ কৃষি সম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ। পুরো ইউরোপ তাদের জ্বালানী ও গ্যাস চাহিদার জন্য অনেকাংশেই রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। রাশিয়াও ইউরোপে জ্বালানী রপ্তানী করে প্রচুর অর্থ আয় করে থাকে। কিন্তু ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নানা মাত্রিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পরে ইউরোপের বাজার ক্রমেই হারিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি, জার্মানীতে নিজেরাই তেল রপ্তানী স্থগিত করে দিয়েছে রাশিয়া। 
এর আগে থেকেই জ্বালানী খাতের জন্য বিকল্প বাজারও ধরেছে রাশিয়া। আগে যেখানে জার্মানী, বেলজিয়াম, স্পেন, ইতালি ইত্যাদি দেশগুলো ছিল তাদের বড় ক্রেতা সেখানে এখন ভারত, চীন ক্রমেই স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে। ইউরোপে রাশিয়ার জ্বালানীর সবচেয়ে বড় ক্রেতা জার্মানী। কিন্তু হঠাত করে কার্যক্রম স্থগিত করার ফলে নতুন করে উত্তেজনা দানা বেঁধেছে। অনেকেই মনে করছেন, ইউরোপের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রথম ধাপ এটা। তাই তারা সতর্ক এবং বিকল্প তেলের কথা চিন্তা করছেন। কাতারকে ইউরোপের জন্য জ্বালানী রপ্তানির প্রস্তাব দিলে তারা জানিয়েছে প্রতি বছর ইউরোপের যে পরিমাণ জ্বালানী দরকার হয় তা একককভাবে সরবরাহ করার মত সামর্থ্য শুধুমাত্র রাশিয়ারই আছে। 
এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানী সংকটে ইউরোপের দেশগুলো। তারা চাইছে রাশিয়ার উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে এনে বিকল্প ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করতে। কিন্তু যেখানে ইউরোপের মোট চাহিদার ৩০ ভাগেরও বেশি চাহিদা পূরণ হয় রাশিয়ার থেকে তারা সেই ঘাটতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবে? যদিও রাশিয়ার জ্বালানীর বিকল্প হিসাবে ভেনেজুয়েলাকে বেছে নিয়েছে আমেরিকা। সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো আবার ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে আমেরিকা, এখন ভেনেজুয়েলার তেল সরসরি যাচ্ছে ইউরোপে। কিন্তু তাতে করে ইউরোপের সংকটের সমাধান হচ্ছে? 
সাময়িক কিছু সমাধান হয়তো সম্ভব, কিন্তু আমি মনে করি না তাতে করে কোন দীর্ঘমেয়াদী সমাধান আসবে বরং ইউরোপ নানাবিধ জটিলতার সম্মূখীন হবে। রাশিয়ার সাথে ইউরোপের সম্পর্কের অবণতির সুযোগ নিচ্ছে চীন ও ভারত। বিশ্বে এই দুই রাষ্ট্রই রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবে খ্যাত। তারা কমদামে রাশিয়ার থেকে জ্বালানী ক্রয় করে নিজেদের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। তবে আমি মনেকরি, ইউরোপে রাশিয়ার এই নিষেধাজ্ঞা বেশিদিন থাকবে না। 
ইতিমধ্যেই নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হতে শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক জড়িপে দেখা গেছে আমেরিকার অধিকাংশ মানুষ তাকে পরবর্তী মেয়াদে আর দেখতে চায় না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুরো বিশ্ব রাজনীতিতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্প আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করবে। তার জয়ের সম্ভাবনা তো উড়িয়ে দেয়া যায় না। সুতরাং আমি মনেকরি, কোন না কোন ভাবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এই সংকটের সমাধান হবে। কিন্তু নতুন করে জন্ম নেবে আরেক সমস্যা। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭