ইনসাইড থট

জ্বালানি সংকট নিরসনে সৌর বিদ্যুৎ


প্রকাশ: 13/07/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট মোকাবেলা করতে সব আমলের সরকারকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। আমরা শুনে আসছি এই খাতে যুগের পর যুগ ভর্তুকি দেয়া হয়ে থাকে। সেই ভর্তুকির সুফল কে পায় তার হিসেব মেলানো খুবই কঠিন কাজ। তবে ধনী দিন দিন ধনী হয়েছে। সুতরাং, পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে হোক বা সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা হোক ধনীর ধন সম্পদ যে জবর দখলের ফসল তা ধনীরা অস্বীকার করলেও বাস্তব হলো অন্যের সম্পদ লুন্ঠন করেই মানুষ ধনী হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। 

২০০৯ সালে যখন সরকার ক্ষমতায় আসে তখন জ্বালানি খাতে কোনো ভর্তুকি দেয়া বন্ধ ছিল। এরপর কি হলো জানিনা এখন আবার শুনছি সেখানে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। আমি এই ভর্তুকি দেয়ার বিপক্ষেই থাকছি।  

আজ আমাদের চাহিদা এমন বেড়েছে যে ঘরে ঘরে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু আছে। আমরা ফ্রিজ টিভি রাইস কুকার ব্যবহার করছি। আমরা আগের থেকে বেশি খাচ্ছি এবং মোটা তাজা হয়ে হাসপাশ করছি। 

আমাদের ভোগের প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণের উপদেশ মাননীয় প্ৰধানমন্ত্ৰী দিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে একমত। আমরা এক বিলাসী জীবন যাপনের পথে হাটছি। এই জীবন ব্যবস্থা কোনোভাবেই টেকসই হতে পারে না। 

সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে টেকসই উন্নয়ন তত্ত্ব আমাদেরকে যে পরামর্শ দেয় তা কাগজে কলমে স্বীকার করলেও সরকার বা জনগণ কেউ সেই পথে হাঁটে না। আমাদের শহর আমাদের গ্রাম একটি কংক্রিটের জঙ্গল হয়ে যাচ্ছে, আমাদের রুচিবোধ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে আর আমরা দিন দিন লোভী হয়ে উঠছি।  

আমাদের মুক্তির পথ তবে কি? এবার পদ্মা সেতু দিয়ে মাত্র দুই ঘন্টা ৩০ মিনিটে বাড়ি গিয়েছে এবং ফিরে এসেছি। সেই সময় আসলে ৪ ঘন্টায় চলে গেছে আমাদের চালকের কারণে। তিনি এক লিটার তেল বাঁচাতে গ্যাস স্টেশনে গিয়ে ৩০ মিনিট নষ্ট করেছেন। তার এই বাঁচানোর মনোভাবকে হয়তো জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা সাধুবাদ দেবেন। কিন্তু এই কাজটি আরও সুন্দর হতো যদি কালনা ব্রিজটি সময় মতো হতো। কাদের ব্যর্থতার কারণে এই সমস্যা তা জানলেও কেউ নেই সেটা দেখবার।  

তেমনি অলসভাবে পড়ে আছে উড়ন্ত রাস্তা কারণ সেটা শেষ হতে সময় লাগবে। কিন্তু যদি বিমানবন্দর থেকে বের হবার জন্য যদি একটি ইউটার্ন ফ্লাই ওভার আগে বানানো হতো তবে সমস্যা কম হতো সেটা আমাদের বোধে আসে না।  

আজ জ্বালানি সংকট নিরসনে বিজ্ঞানীরা সৌর বিদ্যুতের কথা বলেন সেখানে আমাদের বিনিয়োগ ছিল না। যদি সেখানে আমরা বিনিয়োগ করতাম তবে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শিল্প কারখানায় ব্যাপক সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন বিদ্যমান সংকট ও আগামী সুন্দর ভবিৎষ্যৎ নির্মাণে প্রয়োজন সৌর বিদ্যুতের পথে পা রাখা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি না বললে কেউ কিছু করতে উদ্যোগী হয় না। সুতরাং আপনি সৌর বিদ্যুতের জন্য পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি? 

দিনের আলোতেই আমাদের বাজার, অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পকারখানার  চলতে পারে সেজন্য আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।  আমাদের অফিস সকাল ৯ টার পরিবর্তে ৮ টায় শুরু করতে হবে। আমাদের ব্যাংক ৫ টায় শেষ করতে হবে।  

আমাদের ঢাকা শহর থেকে অন্তত ৫০ লক্ষ মানুষ অন্য শহরে চলে যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া কোনোভাবেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আজ পদ্মা সেতুর ওপারে নগর গড়ে সেখানে আমাদের অফিস আদালতকে সরিয়ে নিতে হবে।  

যদি আমাদের ভোগের প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ না করি তবে আমাদের অবস্থা শ্রীলংকার মতো হতে সময় লাগবে না। টেকসই উন্নয়নের জন্য আমাদের ভোগের সংস্কৃতির লাগাম টেনে ধরতে হবে শক্তভাবে। লোড শেডিং সমস্যা সমাধানের পথ হতে পারে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭