কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১২ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনি মারা যান। ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল গোটা জাতি। সেই শোক আজও কাটেনি ভক্ত-পাঠকদের। হুমায়ূন নেই কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন লাখো পাঠকের হৃদয়ে। প্রয়াণ দিবসে সামাজিক মাধ্যমে প্রিয় লেখককে স্মরণ করছেন অনেকে। এছাড়া টেলিভিশন চ্যানেলগুলো তাকে নিয়ে বিশেষ আয়োজনে অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছে।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্ম নেওয়া আধুনিক কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও গীতিকার। তার বাবা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়শা ফয়েজ। তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। রসায়ন শাস্ত্রের শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন ঢাবিতে।
কালজয়ী উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ ও ‘শঙ্খনীল কারাগার’ এর মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে শক্তিশালী এক কথাসাহিত্যিকের আগমনী জানিয়েছিলেন তিনি। তার প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম তিন শতাধিক। গল্প বলার এক নতুন ধারায় তার সব গল্প-উপন্যাসই যেমন জনপ্রিয় তেমনি জনপ্রিয়তা পেয়েছে হিমু, মিসির আলী, বাকের ভাই ও রূপার মতো অসাধারণ সব চরিত্র।
এক সময় সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি মনোনিবেশ করেন চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণে। ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘দুই দুয়ারি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘আমার আছে জল’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্ম।
অসামান্য প্রতিভাবান লেখক হুমায়ূন আহমেদের সাফল্যের ঝুলি বিভিন্ন পুরস্কারে সমৃদ্ধ। সেগুলোর মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, হুমায়ুন কবীর স্মৃতি পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কার একুশে পদক উল্লেখযোগ্য।
২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে ডাক্তারি পরীক্ষায় হুমায়ূন আহমেদের দেহে ক্যান্সার ধরা পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। কৃত্রিম লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে ইহলোক ত্যাগ করেন ভিন্নধর্মী সবার প্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।