ইনসাইড থট

জ্বালানি সাশ্রয়ে সপ্তাহে একদিন হোক গণপরিবহন দিবস


প্রকাশ: 19/07/2022


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রেখেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কমছে এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ বাঁচাতে সরকার ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং। দেড় দশক আগে বিদ্যুৎ থাকতো না বললেই চলে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে পেতে মানুষ এখন ভুলে গেছে সেই দুঃসহ দিনগুলোর কথা। সবাই এখন চব্বিশ ঘণ্টা  বিদ্যুৎ চায়। পাচ্ছিল তাই। কিন্তু এখন বাঁধ সেধেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামালের সংকট, ঊর্ধ্বগতি।

বৈশ্বিক জ্বালানি পরিস্থিতিতে সরকার এখন এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কে কখন বিদ্যুৎ পাবে- আগেই জানিয়ে দেয়া হবে। প্রথমে এক ঘণ্টা। প্রয়োজন হলে দুঘণ্টা। খুব ভালো কথা। জনগণ হয়তো এটুকু মেনে নিবে। বিদ্যুৎবিহীন সময়ে তিনি হয়তো নিজের একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নিতে পারেন। তিনি হয়তো সেসময়ে বাইরে হাঁটার পরিকল্পনা করতে পারেন। রাত আটটার আগে হলে বাজার সওদার কাজটা সেরে নিতে পারেন। অথবা বিদ্যুৎ আছে এমন এলাকার বন্ধু বা আত্মীয়ের বাসায় যেয়ে প্রয়োজনীয় কাজটা সেরে আসতে পারেন। কিন্তু যদি কথা কাজে অমিল হয়, তাহলে জনগণ খেপে যেতে পারে।  এই যেমন ঢাকায় আমার বাসার এলাকায় বলা হচ্ছে সন্ধ্যা ৭টা থেকে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না।  ধরে নিলাম প্রয়োজনে দুঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না। তার মানে সাতটার আগে বিদ্যুৎ যাবে না। নয়টার মধ্যে বিদ্যুৎ চলে আসবে। এর ব্যত্যয় হলে জনরোষ বাড়তে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগকে এটি মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজাতে হবে। লোডশেডিং দিয়েও কথা কাজে মিল রেখে জনসন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।

সরকার আরো কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। সপ্তাহে একদিন পেট্রোল স্টেশন বন্ধ রাখার চিন্তা ভাবনা চলছে। কোনদিন বন্ধ থাকবে তা এখনো আমরা জানি না। সেটা হতে পারে কোন ছুটির দিন। অথবা সপ্তাহের অন্য কোনদিন যেদিন অফিস খোলা থাকে।  ধরুন, সোমবার বন্ধ থাকবে দেশের সব পেট্রোল স্টেশন। কারো যদি একটি ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি থাকে, তিনি যে কোন প্রকারেই হোক রোববারে গাড়িতে পেট্রোল ভরবেন। তাতে কি হবে ? রোববার দেশের সব পেট্রোল স্টেশনে ভিড় লেগে যাবে। বাড়বে শহরে যানজট। সবাই যদি সোমবারের পেট্রোল রোববারে কিনে তাহলে পেট্রোল খরচ বন্ধ করবেন কেমনে ? বরং সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত ও ছোট যানবাহন বন্ধ রাখা যায়। তাতে পেট্রোল খরচ নিঃসন্দেহে কমবে। সেদিন শুধু গণপরিবহন চলবে। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত গণপরিবহন থাকা আবশ্যক। প্রয়োজন গণপরিবহনের আধুনিকায়ন। অতি দ্রুততম সময়ে কিভাবে গণপরিবহন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা যায়, সেটা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কাজ করতে পারে। মোদ্দাকথা, জ্বালানি খরচে সাশ্রয়ী হতেই হবে। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থায় এর কোন বিকল্প নেই। তবে সেটা সপ্তাহে একদিন পেট্রোল স্টেশন বন্ধ করে নয়। জ্বালানি খরচ সাশ্রয়ে সপ্তাহে অন্তত একদিন হোক গণপরিবহন দিবস।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭