শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন শরীরের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন ও মিনারেল। আর শরীরের জন্য অপরিহার্য এমনই একটি ভিটামিন-ডি, যা উৎপন্ন হয় শরীরের ভেতরেই। সঠিক মাত্রায় থাকলে ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তা ছাড়াও ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সহজ করে তোলে ভিটামিন ডি।
বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, ত্বকের ব্যাধিতে, এমনকি, ক্যানসারের মতো রোগ প্রতিরোধে উপকারী। এটি শরীরের পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
>> ভিটামিন ডি কম থাকলে শরীরের প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। ফলে ঘন ঘন সংক্রমণ হলে শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা পরীক্ষা করা দরকার।
>> ভিটামিন ডি-এর কারণে পেশিতেও টান ধরতে পারে। ভিটামিন ডি-র ঘাটতি বহু ক্ষেত্রে পেশির শক্তি কমিয়ে দেয়।
>> ক্লান্তি হলো ভিটামিন ডি ঘাটতির আরও একটি উপসর্গ। পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে এবং ঠিক মতো খেয়েও যদি ক্লান্তি না কমে তবে এই বিষয়ে বাড়তি সচেতন হওয়া জরুরি।
>> হাড়ে ব্যথাও ভিটামিন ডি-র ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। টানা এমন ব্যথা থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
>> পর্যাপ্ত যত্ন নিয়েও চুল পড়া কমছে না? ভিটামিন ডি-র অভাবেও এমনটি হতে পারে। এক বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। ভিটামিনে ডি-এর অভাব ঘটলে ওষুধ খাওয়া জরুরি।
>> গবেষণায় দেখা গেছে যেসব গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ডি এর অভাবে ভোগে তাদের প্রি একলাম্পসিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। এছাড়াও বাচ্চার অকাল জন্মের জন্যও দায়ী হতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাব।
যেসব খাবার থেকে পাবেন ভিটামিন ডি
>> মাছ ও মাছের তেল: বিভিন্ন মাছ থেকে ভিটামিন ডি পাবেন। টুনা মাছ, স্যামন মাছ এসবে প্রচুর পরিমাণে থাকে এই ভিটামিন। সামুদ্রিক যে কোনো মাছ খেতে পারলে আরো ভালো।
কড লিভার ওয়েলে থাকে প্রচুর ভিটামিন ডি। এক টেবিল চামচ কড লিভার ওয়েল থেকে পাবেন ১৩৬০ ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিট ভিটামিন ডি। যা আপনার দৈনিক চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ।
>> ডিমের কুসুম: আমরা অনেকেই কুসুম খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু কুসুম বাদ দিবেন না খাদ্য তালিকা থেকে। ভিটামিন ডি এর আরেকটি ভালো উৎস হলো ডিমের কুসুম। একটা ডিমের কুসুম থেকে পাবেন ৪১ ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিট ভিটামিন ডি। যা দিয়ে আপনার দৈনিক চাহিদার ৭ শতাংশ পূর্ন হবে। তবে যাদের রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে তারা ডিমের কুসুম না খাওয়াই ভালো।
>> মাশরুম: নিয়মিত মাশরুম খেতে পারেন। সূর্যালোকে জন্মানো মাশরুম গুলো আপনার ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করবে। এক কাপ মাশরুম থেকে পাবেন ৩২.৮ ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিট। যা আপনার দৈনিক চাহিদার ৫.৫ শতাংশ পূরণ করবে।
>> গরুর কলিজা: কলিজা ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। ৩ আউন্স কলিজা থেকে আপনি পাবেন প্রায় ৪২ ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিট ভিটামিন ডি।
>> দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য: ডেইরি প্রোডাক্ট থেকে আপনি ভালো পরিমাণে ভিটামিন ডি পাবেন। দুধ, মাখন, চিজ, পনির প্রভৃতি রাখতে পারেন খাদ্য তালিকাতে।
>> কমলার জ্যুস: এক কাপ কমলার জ্যুস থেকে আপনি ১০০ ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিট ভিটামিন ডি পেতে পারেন।