এডিটর’স মাইন্ড

ড. মঈন খানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব


প্রকাশ: 27/07/2022


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার একটি প্রস্তাব নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপিতে চলছে তোলপাড়। কূটনীতিক পাড়া থেকে এই প্রস্তাবটি এসেছে। প্রস্তাবটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফোরামে করা হলেও সর্বশেষ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে করা হয়। কিন্তু এই প্রস্তাবটির কথা গত পরশু লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কানে পৌঁছায়। এই বিষয়টি কূটনীতিকরা বলছেন কিনা, তা তারেক জিয়া বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চান। বিএনপি মহাসচিব স্বীকার করেন যে, এরকম বিষয়টি এসেছে। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া বিএনপি মহাসচিবকে জিজ্ঞেস করেন যে, এর প্রতিবাদ করা হয়েছে কিনা। এ ব্যাপারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নীরব থাকেন। আর এটিই তার সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন লন্ডনে পলাতক, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম দণ্ডিত এই ব্যক্তি। শুধু তিনি ক্ষুব্ধই হননি, বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের কাছে তারেক জিয়া বলেছেন যে, বিএনপি ভাঙার নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। 

গত কিছুদিন ধরেই বিএনপির নেতৃবৃন্দ কূটনীতিক পাড়ায় যোগাযোগ করছেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সমর্থন আদায়ের জন্যই তারা কূটনীতিক পাড়ায় যোগাযোগ করছেন বলে বিএনপি নেতারা বলেছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন যেন অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় এবং সেই নির্বাচনে যেনো জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটে এটা নিয়ে বিভিন্ন মহলে দেনদরবার করছেন বিএনপি নেতারা। এই দেনদরবারের অংশ হিসেবে তারা জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, মার্কিন দূতাবাস, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ব্রিটিশ দূতাবাসসহ বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেছেন। কেন অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে সম্ভব নয়, সে সম্পর্কে তারা নানা রকম ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। কিন্তু এই সমস্ত আলাপচারিতায় কূটনৈতিক মহল থেকে কিছু কিছু প্রশ্ন উঠেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে। পশ্চিমা দেশগুলো জানতে চেয়েছে, একজন দণ্ডিত পলাতক ব্যক্তি কিভাবে একটি দলের প্রধান থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত তার দণ্ড এবং বিচার নিষ্পত্তি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তার বিএনপিতে থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন। 

বিএনপির অতি উৎসাহী দু'একজন, যারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা বলেছেন যে, এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার কোনো বিকল্প নেই, এ জন্য তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে রেখেছেন। কিন্তু তখনই মার্কিন দূতাবাসের একজন কূটনীতিক প্রশ্ন করেন 'হোয়াটস এবাউট ড. মঈন?' প্রথমে এই প্রশ্নের উত্তর দেননি বিএনপির নেতারা। দ্বিতীয় দফায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকেও একই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয় এবং তখনও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি ড. মঈন খান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলে কেমন হয় জানতে চান। সর্বশেষ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বিট্রিশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখানেও মঈন খানের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন কিনা- এ নিয়ে আলোচনা হয়। 

অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে যে, ড. মঈন খান কূটনৈতিক পাড়ায় অন্তত গ্রহণযোগ্য এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি। কূটনৈতিকদের সঙ্গে তার ভালো যোগাযোগ রয়েছে। তার বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে কূটনীতিকরা দাওয়াতে অংশ নিতে আসেন। মঈন খানের প্রতি তাদের একটা আলাদা সহানুভূতি রয়েছে এবং তারা তাকে জ্ঞানী এবং পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে জানেন। এজন্যই বিভিন্ন সময় তারা মঈন খানকে বলেছিলেন যে, তিনি যেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। এটি বিএনপির রাজনীতির ইতিবাচক হবে বলেও তারা ড. মঈন খানকে বলেছেন। যদিও মঈন খান এই বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কোনো কথা বলেননি বা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য কোনো আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক মহল থেকে বারবার তার নাম উচ্চারিত হওয়ায় তারেকপন্থীরা এটাকে ষড়যন্ত্র মনে করছেন এবং নির্বাচনের আগে বিএনপি ভাঙ্গার অংশ হিসেবেই এই রকম ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭