ইনসাইড বাংলাদেশ

সংকট নয় ষড়যন্ত্র দেখছে সরকার


প্রকাশ: 27/07/2022


Thumbnail

বিশ্বমন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক বাস্তবতার কারণে বিশ্বে একটি অর্থনৈতিক সংকট দৃশ্যমান। সেই সংকটের ঢেউ এসে লেগেছে বাংলাদেশেও। গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি অস্বস্তির কালোমেঘ দানা বেঁধে উঠেছে। এ কারণে সরকার এখন কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গ্রহণ করে এগুচ্ছে। লোডশেডিংয়ে যেতে হয়েছে দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাদেশে তেলের দাম বেড়ে গেছে, বেড়ে গেছে জ্বালানি মূল্য। ফলে সরকার বাধ্য হয়েই ডিজেল চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এই যুদ্ধের কারণে আমদানি ব্যায় বেড়ে গেছে। যে সমস্ত জিনিসপত্র আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাংলাদেশকে কিনতে হতো খাদ্য সামগ্রীসহ তার দাম অনেক গুন বেড়ে গেছে। ফলে রেমিটেন্সের উপর চাপ পড়েছে। দুই বছর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। তাছাড়া প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স কমে গেছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশকে আগামী দিনের শ্রীলঙ্কা মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন যে, সামনের দিনগুলোতে সংকট ঘনীভূত হবে।

সিপিডি গত সোমবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠান করে। সেখানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে বলেও কেউ কেউ আশঙ্কা করেছে। এছাড়াও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দাবি করেছেন যে, ২০২৪ সাল থেকে বড় বড় মেগা প্রকল্পের দায় মেটানোর জন্য সরকারের উপর চাপ পড়বে। এসব নিয়ে আশঙ্কা এবং আতঙ্কের খবর ছাপানো হচ্ছে। গণমাধ্যমেও কয়েকটি পত্রিকা ক্যাপাসিটি চার্জ বিদ্যুতের গলার ফাঁস হিসেবে উল্লেখ করছে। কেউ কেউ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট সামনে আরো গভীরভাবে বলে প্রক্ষেপণ করছেন। কিন্তু সরকার সামগ্রিক বাস্তবতার নিরিখে বলছে যে, কৃচ্ছ্রসাধন করা হচ্ছে তার মানে এই নয় যে অর্থনৈতিক সংকট হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন সংকট না হয় সে জন্য আগাম ব্যবস্থা হিসেবেই কৃচ্ছ্রসাধন করা হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে সরকার বরং মনে করছে যে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর মাধ্যমে কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ এই সংকটকে সামনে এনে ষড়যন্ত্র করারও চেষ্টা করছেন। 

আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নীতিনির্ধারক বলেছেন যে, বর্তমানে যে সংকটটি চলছে এটি একটি বৈশ্বিক সংকট, শুধু বাংলাদেশের সঙ্কট নয়। অথচ এমনভাবে এটি উপস্থাপন করা হচ্ছে মনে হচ্ছে যে বৈশ্বিক নয়, এটি বাংলাদেশের নিজস্ব সংকট এবং এটি সরকারের কারণে সৃষ্ট। অন্য একজন উপদেষ্টা বলেছেন যে, পুরো বিশ্বে যে পরিস্থিতি, সেই পরিস্থিতির চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো। কিন্তু বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা আলোচনায় না নিয়ে এসে শুধু বাংলাদেশ প্রসঙ্গই আলোচনা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেছেন যে, বাংলাদেশ এখনো যে অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে ভালো আছে, এই কথাটি বলা হচ্ছে না। তিনি বলেছেন যে, অর্ধ সত্য অনেক সময় মিথ্যা চেয়েও ভয়ঙ্কর। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, একটি নীলনকশা নিয়ে এগুনো হচ্ছে। এই নীলনকশাটি তৈরী করা হয়েছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে। নির্বাচনের আগে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণাগুলোকে ঢুকিয়ে দেওয়া লক্ষ্যেই এসব কিছু করা হচ্ছে বলে সরকার মনে করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭