ইনসাইড গ্রাউন্ড

সিনিয়রদের ছাড়া চ্যালেঞ্জের মুখে টাইগাররা


প্রকাশ: 28/07/2022


Thumbnail

তারুণ্যনির্ভর দল। নেই কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার। মাশরাফি বিন মুর্তজা অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলে নেই। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন তিনি। একই পথে হেঁটেছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাকিব আল হাসান ছুটিতে আছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিমকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। এজন্য এই সংস্করণের অধিনায়কত্ব পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। তাতেই এবার জিম্বাবুয়ে সফরে ‘পঞ্চপাণ্ডবশূন্য টিম বাংলাদেশ’। জিম্বাবুয়ে সিরিজের ৩টি টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেবেন সোহান। দলকে এক সুতোয় গাঁথার জন্য সময়টা একেবারেই বেশি নয়। এরই মধ্যে যা দেখানো তাকে দেখাতে হবে। 

পাঁচ শীর্ষ ও জনপ্রিয় তারকাকে ছাড়াই এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ের পথে টাইগাররা। অধিনায়ক পদে সাড়ে তিন বছর ক্যাপ্টেন্সি করা রিয়াদের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়েছে উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানকে। এক যুগের বেশি সময় সব ফরম্যাটেই টিম বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি, সবচেয়ে বড় নির্ভরতা ‘পঞ্চপাণ্ডব।’ তাদের ছাড়া টিম বাংলাদেশ কল্পনাও করা যায়নি। সব আসর, সিরিজে তাদের ঘিরেই আবর্তিতত হতো সব কিছু। বিশেষ করে সাকিব, তামিম, মুশফিক আর রিয়াদের অন্তত তিনজন ছাড়া ক্রিকেটের ছোট পরিসরে দল হয়েছে খুব কম। অথচ এবার তাদের একজনও নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে একঝাঁক তরুণ ও নবীন ক্রিকেটারে গড়া দল নিয়েই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে সোহানের দল।

প্রতিপক্ষ দলটি জিম্বাবুয়ে। যার বিপক্ষে বেশ কয়েক বছর ধরে প্রায় বলেকয়েই জেতে বাংলাদেশ। সুতরাং, ধরে নেয়া হচ্ছে এবার পরিণত, অভিজ্ঞ আর শীর্ষ তারকাদের ছাড়াও হয়তো সমস্যা হবে না টিম বাংলাদেশের। কিন্তু আসলে কি তাই? কাজটা বাস্তবে ততটা সহজ হবে? জিম্বাবুয়ে যত দুর্বল দলই হোক না কেন, বাংলাদেশের যে দলটি সোহানের নেতৃত্বে খেলতে নামবে, সেই দল কী বলেকয়ে জিম্বাবুয়েকে হারানোর সামর্থ্য রাখে? অনেকের মনেই প্রশ্ন, সিনিয়র ও অভিজ্ঞ এবং অপরিহার্য সদস্যদের অনুপস্থিতিতে এসব তরুণরা কী পারবেন নিজেদের মেলে ধরে দলকে সাফল্যের বন্দরে পৌছে দিতে?

যদিও স্বল্প সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর দলের পাঁচ সিনিয়র অর্থাৎ ‘পঞ্চপাণ্ডব’-এর সঙ্গে কথা হয়েছেন সোহানের। তাদের কাছ থেকে পেয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন সোহান বলেছেন, ‘সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে। রিয়াদ ভাই, সাকিব ভাই, তামিম ভাই, মুশফিক ভাই; মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে।’ সঙ্গে যোগ করেন সোহান, ‘সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। নরমাল যে কথাগুলো হয়, এগুলোই। বিশেষ কিছু না। নরমাল যেভাবে কথা হয়, ওরকমই। আর আমার কাছে মনে হয় যেটা, আমি চিন্তা করতেছি জিনিসটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই।’ সিনিয়র ক্রিকেটারদের থেকে পরামর্শ পেয়েছেন কি-না জানতে বললেন, ‘পরামর্শ আসলে স্বাভাবিকভাবে যেভাবে কথা হয়, এইটাই। খুব বেশি ওরকম কিছু না। সবকিছুই সিম্পল জিনিসটা তাদের কাছ থেকে, অনেক বছর একসঙ্গে খেলেছি। যেটা বললাম তাদের যে অভিজ্ঞতা আছে। সবার অধীনেই খেলা হয়েছে, সবকিছু মিলিয়ে আসলে জিনিসটা নিজে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।’

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, সবাই শুধু সাকিব, রিয়াদ, মুশফিক আর তামিমকে ছাড়া কি হবে এটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। একবার সিনিয়রদের ছাড়া খেলে তো দেখা উচিৎ যে তারাও কেমন করে। সব সময় তো সিনিয়ররা থাকবে না। তাদেরও তো বিদায় নিতে হবে। ফলে তখন এই তরুণদের ওপরই নির্ভর করতে হবে দেশকে। ফলে তাদের সুযোগ দেওয়াই উচিৎ। যদিও এই শীর্ষ তারকাদের ম্যাচ সংখ্যা, রান, ফিফটির সঙ্গে এবার দলে থাকা তরুণদের ম্যাচ, রান ও পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা একদমই বেমানান। সাকিব, রিয়াদ, তামিম ও মুশফিকদের পরিসংখ্যান আসলে কত সমৃদ্ধ, দলের জন্য তাদের অবদান কত বেশি, সেটা বলেও শেষ করা কঠিন। তাদের সাফল্য, অর্জন, কৃতিত্ব আর অভিজ্ঞতার অনুপাতে শীর্ষ তারকাদের তুলনায় তরুণরা যোজন যোজন পিছিয়ে। তথাপিও সুযোগ না দিলে তারা শিখবে না। ফলে এটা বিসিবির একটি ভালো সিদ্ধান্ত। তরণরা এই টি-টোয়েন্টিতে ভালোই করবে এবং কঠিন চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করবে বীরের মতো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭