ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারত-ইরানকে নিয়ে বাণিজ্যপথ চালুর উদ্যোগ রাশিয়ার


প্রকাশ: 28/07/2022


Thumbnail

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। এরপর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে শুরু হয় রাশিয়ার অর্থনৈতিক যুদ্ধ।  রুশদের ওপর হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো। এতে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বিশ্ববাণিজ্যে। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে কৃষ্ণসাগর হয়ে শস্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিশ্ববাজারের হু হু করে বাড়ছে খাদ্যশস্যের দাম। দিন যতই যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই খারাপের দিকেই যাচ্ছে।

বিশ্ববাণিজ্যের এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে রাশিয়া। এর অংশ হিসেবে ভারত ও ইরানকে সঙ্গে নিয়ে বাণিজ্যের পুরনো একটি রুট সক্রিয় করার চেষ্টা করছে তারা। এই রুটটির নাম ইন্টারন্যাশনাল নর্থ–সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর (আইএনএসটিসি)। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে শুরু করে মস্কো, ইরানের তেহরান, ইস্পাহান হয়ে ভারতের মুম্বাই আসবে। এর দৈর্ঘ্য ৭ হাজার ২০০ কিলোমিটার। এতে যুক্ত রয়েছে মহাসড়ক, রেলপথ ও সমুদ্রবন্দর। 

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত জুনে প্রথমবারের মতো একটি পাইলট প্রকল্প ঘোষণা করে ইরান। এর আওতায় আইএনএসটিসি রুট ধরে দেশটির বন্দরআব্বাস থেকে দুই কনটেইনার রাশিয়ার তৈরি পণ্য ভারতে পাঠায় ইরান। জুলাইয়ে এই রুট ধরে ভারতে আসে আরও ৩৯ কনটেইনার পণ্য।

এ বিষয়ে ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েটের সাবেক পরামর্শক বৈশালি বসু শর্মা বলেছেন, “এটি কেবল শুরু।”

এই মাসের শুরুর দিকে সাবেক সোভিয়েত দেশ এবং বাল্টিকস রাষ্ট্রের বৃহত্তম মাল্টিমডাল পরিবহন অপারেটর আরজেডডি লজিস্টিক, আইএনএসটিসি রুটে একটি নতুন কন্টেইনার ট্রেন পরিসেবা চালু করেছে। এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এই বাণিজ্য করিডোর প্রতি বছর প্রায় ২৫ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পণ্যের ৭৫ শতাংশই পরিবহন করা হবে ইউরেশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে।

এ বিষয়ে হংকংভিত্তিক বিনিয়োগবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘দেজান শিরা অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের’ প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস দেভোনশায়ের–এলিস বলেন, “পূর্বাঞ্চলের এই রুট সক্রিয় করতে খুবই আগ্রহী রাশিয়া। বিশেষত ইউক্রেন যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জেরে অর্থনৈতিক চাপ এ বিষয়ে মস্কোর আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।”

এই রুটের বিশেষ কৌশলগত ও বাণিজ্যক গুরুত্বও রয়েছে। এই পথ ব্যবহার করে ভারত থেকে পশ্চিম ইউরোপে পণ্য পরিবহনের সময় ৪০ থেকে ৬০ দিন থেকে কমে ২৫ থেকে ৩০ দিনে নেমে আসবে। খরচ বাঁচবে প্রায় ৩০ শতাংশ। এই রুট মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানকে যুক্ত করলেও পাকিস্তানকে এড়িয়ে গেছে, যা ভারতের জন্যও সুবিধাজনক। এছাড়া ইরানের চাবাহার বন্দর নির্মাণে ২০১৬ সালে ভারত বিনিয়োগ করেছে। দিল্লি চায়, আইএনএসটিসি রুটে চাবাহার যুক্ত হোক।


সূত্র: আল-জাজিরা



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭