ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরো খারাপের দিকে আগাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি সংকট


প্রকাশ: 29/07/2022


Thumbnail

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো দুই বছর ধরেই সংকটময় পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু চলতি বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযান শুরুর পর বিশ্বে যে জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে।  

অর্থনৈতিক সংকটে দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে জ্বালানি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন দক্ষিণ এশিয়ার ওই দেশগুলোর কাছে জ্বালানি বিক্রি করতে চাইছে না। আর এতে সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে বলে ব্লুমবার্গের গতকাল বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পানি পাকিস্তান স্টেট অয়েল করপোরেশনের কাছে কয়েকটি কম্পানি তেল বিক্রি করতে চাইছে। কিন্তু জ্বালানি আমদানির জন্য যে বৈদেশিক অর্থের প্রয়োজন, তা পাকিস্তানকে ঋণ হিসেবে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।  

শ্রীলঙ্কাকেও একই সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশটি এখন প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে নিয়মিত তেল নিয়ে সরবরাহব্যবস্থা চালু রাখতে চাইছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের কারণে জ্বালানির মূল্য যে হারে বাড়ছে, তাতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে এখন জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অধিক অর্থ (বৈদেশিক মুদ্রায়) ব্যয় করতে হচ্ছে। রিজার্ভ কম থাকায় যে দেশগুলো জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না, সেখানে শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এর জলজ্যন্ত উদাহরণ।  

এশিয়া প্যাসিফিকের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাজীব বিশ্বাসের মতে, উঠতি বাজার অর্থনীতির অনেক দেশের ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ ওই অর্থনীতিগুলো মূলত বৈদেশিক মুদ্রার অল্প রিজার্ভ দিয়ে জ্বালানি আমদানি করে অর্থনীতি চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করে আসছিল।

পাকিস্তানের কাছে তেল বিক্রি করতে চাইছে না অনেক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। ডলারের বিপরীতে দেশটির রুপির মান কমে যাওয়ায়, পাকিস্তান আসলেই জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে পারবে কি না, এ নিয়ে সন্দিহান রপ্তানিকারকরা। এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও পাকিস্তানকে সাহায্যে এগিয়ে আসছে না। চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের স্টেট অয়েল করপোরেশনের কাছে মাত্র একটি কম্পানি গ্যাসোলিন বিক্রির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। অথচ গত মে মাসেও কমপক্ষে আটটি কম্পানি পাকিস্তানে গ্যাসোলিন বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল।

ঋণখেলাপি হওয়া শ্রীলঙ্কাকে অনেক দিন ধরেই তেল দিয়ে আসছে ভারত। কিন্তু এখন নয়াদিল্লিও তাদের তেলের জন্য অগ্রিম অর্থ চাইছে কলম্বোর কাছে। এতে অন্য তেল বিক্রেতারাও এখন কলম্বোর কাছে তেল বিক্রি করতে চাইছে না। আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকারের দফায় দফায় আলোচনা চলছে, কিন্তু এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।


সূত্র : ব্লুমবার্গ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭