ইনসাইড ইকোনমি

সংকট কাটছে


প্রকাশ: 02/08/2022


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনার প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কালমেঘ ছেয়ে গিয়েছিল সেই মেঘ ক্রমশ কাটতে শুরু করেছে। পরপর কিছু আশাব্যঞ্জক খবর বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করেছে এবং সরকারের মধ্যেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে। একাধিক কারণে সরকার মনে করছে, সরকার বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপের মুখে নেই। বাংলাদেশে যে সংকটগুলো তৈরি হয়েছিল সেই সংকটগুলো শিগগিরই কেটে যাবে বলে ধারণা করছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল। যেসব বিষয় সংকট কাটছে তার মধ্যে রয়েছে-

১. রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে: জুলাই মাসে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স বাংলাদেশে এসেছে। দুইশ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আমরা পেয়েছি। সামনের দিনগুলোতে আরও রেমিট্যান্স বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়ার আশা করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর ফলে আমাদের রিজার্ভের উপর যে চাপ, সেই চাপ কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২. রপ্তানিতে সুখবর: বাংলাদেশে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সুখবর পাওয়া যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে গার্মেন্টসে ব্যাপক পরিমাণ চাহিদা এসেছে এবং এই চাহিদাগুলো যদি আমরা পূরণ করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের চেয়ে বাড়বে। তাছাড়া আমদানি সংকোচনের যে নীতি সরকার গ্রহণ করেছে সেই নীতির সুফল পাওয়া যাবে কিছুদিনের মধ্যেই। ফলের আমদানি এবং রপ্তানি ব্যয়ের মধ্যে যে দূরত্ব, যে বৈষম্য তা আস্তে আস্তে কমে আসবে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ব্যবধান সবচেয়ে বেশি ছিলো। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

৩. আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস: সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের ঘটনা ঘটেছে এবং সামনে জ্বালানি তেলের মূল্য আরও হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সরকারের যে লোডশেডিং কর্মসূচি সেখান থেকে সরকার সরে আসতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম না কমলেও সেপ্টেম্বরে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন হচ্ছে, নতুন করে আবার কাজ শুরু হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের। গত সোমবার রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের সরঞ্জাম মংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। ফলে এটির কাজ এখন দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হবে। এই দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে বাংলাদেশের ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে এবং সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আসবে।

৪. বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমে যাচ্ছে: রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে নিজের চুক্তি হয়েছে সেই চুক্তির প্রেক্ষাপটের ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী জাহাজ ইতিমধ্যে চলাচল শুরু করেছে। এই শস্য বিশ্ব বাজারে আসার সাথে সাথে খাদ্যমূল্যের দাম আরেক দফা কমবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ফলে যে সমস্ত খাদ্যশস্য আমাদের বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় সেগুলোর দাম কমে যাবে। এর ফলে আমাদের রিজার্ভ এবং ডলারের উপর চাপ কমবে।

৫. খাদ্য উৎপাদনে সুখবর: বাংলাদেশে আগামী মৌসুমে খাদ্য উৎপাদনে সুখবরের বার্তা পাওয়া যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে রেকর্ড করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই সবকিছু মিলিয়ে যে সংকটের অশনিসংকেত দেখা গিয়েছিল বা যে সংকটের কথা বলা হচ্ছিল সেই সংকট আমরা দ্রুতই কাটিয়ে উঠতে পারব বলে সরকারের দায়িত্বশীল যা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭