ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুলের সাথে সরকারের যোগাযোগ: বিএনপিতে তোলপাড়


প্রকাশ: 02/08/2022


Thumbnail

বিএনপি যখন আর নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনের কথা ভাবছে ঠিক সেই সময় সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বৈঠকের খবর চাউর হয়েছে। এই বৈঠক নিয়ে বিএনপি'র মধ্যে তোলপাড় চলছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন যে, ফকরুল একজন বিশ্বাসঘাতক। যখনই বিএনপি আন্দোলনের চেষ্টা করে তখনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করেন এবং এই আন্দোলনকে সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিচালিত করেন। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির একাধিক নেতা এ ধরনের বৈঠকের খবর অস্বীকার করেছে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, এগুলো সরকারের অপপ্রচার জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এবং বিএনপিকে আন্দোলন থেকে দিকভ্রান্ত করার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার করা হয়। আসলে এ ধরনের কোনো বৈঠক করা হয়নি।

কিন্তু একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের অন্তত তিনজন ব্যক্তির বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে আগামী নির্বাচনের উপায় কৌশল এবং বিএনপির অবস্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের কাছে বিএনপির প্রত্যাশার জায়গাগুলো বলেছে এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিশ্বাসভঙ্গের কথাও বলেছে। যে তিনজনের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউই সরকারের মন্ত্রী নন তবে তারা সরকারের নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর দায়িত্ব রয়েছেন এবং অতীতেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপি সাম্প্রতিক সময়ে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করার চিন্তাভাবনা করছে সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, এটি প্রাথমিক পর্যায়ের বৈঠক। নির্বাচনের আগে বিএনপি সাথে এ ধরনের আলাপ-আলোচনা এবং বৈঠক একাধিকবার হবে। এইসব বৈঠকের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনের পথে আসবে বলে সরকারের একাধিক মহল মনে করছে।

তবে বিএনপির মধ্যে এই বৈঠক নিয়ে দুই রকমের মতামত পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপিরর একাংশ বলছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে এ ধরনের বৈঠক করা অসম্ভব নয়। কারণ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন সরকারের এজেন্ট। বিএনপি'র একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের সাথে বৈঠক করেছিলেন এবং সেখানে আসন ভাগাভাগির জন্য দেনদরবার করেছিলেন, সরকারের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিলেন। ওই নেতা দাবি করেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিকিৎসাব্যয় পুরোপুরি সরকার বহন করেছিল। ওই সময় সরকারের সাথে দেনদরবারের কারণে শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্ররোচিত করেছিল এবং কোনোরকম দাবি-দাওয়া পুরন ছাড়াই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে গিয়েছিল বিএনপি। তারা মনে করে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি করলেও তিনি সরকারের একজন আজ্ঞাবহ এবং সরকার যেভাবে চায় সেভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপিকে পরিচালিত করেন।

অন্য একজন নেতা অবশ্য এ ধরনের বৈঠকের বাস্তবতা অস্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন যে, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি এক নয়। এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক করলেও কোন লাভ হবে না। কারণ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে কার্যত কোনো ক্ষমতাই নেই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেটিই করবেন যেটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্দেশ দিবেন। কাজেই এই ধরনের বৈঠকের সঠিক নয়। তারা বলছেন যে, সরকার বিএনপিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এবং বিএনপিকে চাপে ফেলার জন্য এ ধরনের প্রচারণার কৌশল নিয়েছে। আসলে এ ধরনের বৈঠক হয়নি। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৭, ২৯ এবং ৩১ তারিখে গুলশানে কোন অজ্ঞাত স্থানে গিয়েছিলেন, এই প্রশ্নের উত্তর বিএনপির কোনো নেতাও দিতে পারেননি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭