ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব?


প্রকাশ: 03/08/2022


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যখন চলছে, ঠিক সেইসময় তাইওয়ানে মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাইওয়ানে মার্কিন স্পিকারের সফরের বিরোধিতা করেছেন চীন এবং চীন এই সফরকে কঠোরভাবে নিয়েছে। তারা বলেছে যে, এর উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। এই নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে চলছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বময় এক উত্তেজনা চলছে। অর্থনৈতিক সংকট ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। যদিও সাম্প্রতিককালে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে কিছু সমঝোতার ফলে ইউক্রেন থেকে শস্য আমদানি শুরু হয়েছিল। এর ফলে বিশ্ব বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কিছুটা হলেও কমেছে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে যখন বিশ্ব কিছুটা আশাবাদী হতে চাইছে ঠিক সেইসময় তাইওয়ান নিয়ে ঘটনা শুরু হলো। তাইওয়ানের ব্যাপারে সব সময় চীন অতিরিক্ত স্পর্শকাতর। চীনের যে এক চীন নীতি, সেই নীতিতে তাইওয়ানকে তারা চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। কিন্তু মার্কিন নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করে যেনাে চীনকে বুঝিয়ে দিলেন যে, বিশ্বে এখনও মোরল হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

যদিও ন্যান্সি পেলোসির এই সফরকে সমর্থন জানাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বরং ওয়াশিংটন পেলোসিকে তাইওয়ান সফর না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি এই অনুরোধ শোনেন নি। বরং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য তাইওয়ান সফর করলেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলো কিনা এ নিয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনা হচ্ছে। কারণ তাইওয়ান নিয়ে চীন সবসময় কঠোর উচ্চারণ করছেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি সব সময় আগ্রাসী নীতিতে বিশ্বাসী। গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে তিনি আগুন নিয়ে না খেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং তাইওয়ানে যদি ন্যান্সি পেলোসি সফর করে তবে চীন তার সমুচিত জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এখন মার্কিন এই নেতার সফরের পর পর কাল থেকে রোববার পর্যন্ত তাইওয়ান এলাকায় সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। তাছাড়া মার্কিন দূতাবাস থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন।

অন্যদিকে ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে যে, চীন কি এখন তাইওয়ানে অভিযান পরিচালনা করবেন? যেভাবে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান পরিচালনা করেছিল? আপাতদৃষ্টিতে দুটি ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন হলেও দুটি একই সূত্রে গাঁথা। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে এক মেরুকরণ ঘটছে। রাশিয়ার যখন ইউক্রেন আক্রমণ করেছে, তখন প্রচ্ছন্ন হলেও চীন তাকে সমর্থন দিয়েছিল। আর এবার চীন যখন তাইওয়ান অভিযানের হুমকি দিচ্ছে তখন সেটাকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া। ফলে বিশ্বে মার্কিন একাধিপত্যের বিরুদ্ধে চীন-রাশিয়া জোট দৃশ্যমান হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্যই যে ন্যান্সি পেলোসিকে তাইপেতে পাঠিয়েছেন এটা নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এই জেদের কারণে তিনি কি বিশ্বকে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন? খুব শীগ্রই হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭