ইনসাইড পলিটিক্স

নীলার অব্যাহতি: ঘুম হারাম এক মন্ত্রীর


প্রকাশ: 05/08/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলাকে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল তার অব্যাহতি প্রদানের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। বৃহস্পতিবার নীলাকে এই চিঠি প্রদান করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার রাজনীতিতে নীলা একটি বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ভূমি দখলসহ নানারকম অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠছিল। এই প্রেক্ষিতেই জেলা আওয়ামী লীগ তাকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু ফেরদৌসী আলম নীলাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর একজন মন্ত্রীর নিদ্রাহীন রাত কেটেছে। বৃহস্পতিবার ওই মন্ত্রী আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ অন্তত একাধিক নেতার সঙ্গে টেলিফোন করেছেন এবং এই অব্যাহতি যেনো প্রত্যাহার করা হয় সে জন্য তদবির করছেন বলে জানা গেছে। 

আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে, এক মন্ত্রী তাকে ফোন করেছিলেন এবং নীলার এই অব্যাহতির বিষয়টি যেন এখন না করা হয় সেজন্য তাকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সেজন্য ওই সাংগঠনিক সম্পাদক কিছু করেননি। এছাড়াও আরো কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গেও ওই মন্ত্রী কথা বলেছেন। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নীলার উত্থান হয়েছিল শামীম ওসমানের হাত ধরে। কিন্তু শামীম ওসমানের সঙ্গে পরবর্তীতে আর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তার ছিল না বলেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। ক্রমশ ফেরদৌসী আলম নীলা ওই মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত হচ্ছিলেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরে তিনি মন্ত্রী হওয়ার পর নীলার উত্থান ঘটে এবং নীলা বেপোরোয়া হয়ে ওঠেন বলে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী দাবি করেছেন। তারা বলেছেন যে, ওই মন্ত্রীর ছত্রছায়ায় নীলা বেপোরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তবে এই ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ জেলায় এখন এক ধরনের স্বস্তি চলছে। আওয়ামী লীগের যারা বাড়াবাড়ি করে, আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে যারা বিভিন্ন অপকর্ম করে তাদের বিরুদ্ধে দল যে কঠোর অবস্থানে যায় সেটি আরেকবার প্রমাণিত হলো বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নীলাকে যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেটি চূড়ান্ত নয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। তারা বলছেন যে, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কাউকে অব্যাহতি দিতে পারে না। এই অব্যাহতির চিঠিটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুমোদন হতে হবে। তবেই অব্যহতি কার্যকর হবে। এর আগেও নোয়াখালীর জামালপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ব্যক্তিকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই বিষয়গুলো এখনো কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিষ্পত্তি হয়নি। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এখানে একজনকে দল থেকে অব্যাহতি দিতে গেলে সুনির্দিষ্ট গঠনতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুসরণ করতে হয়। তবে নীলার অনেক নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের তথ্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে আছে বলে ওই নেতা জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় ঘুম হারাম করে যে মন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় দেন-দরবার করছেন তিনি নীলাকে আবার পুনর্বাসিত করতে পারেন কিনা। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭