ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

৯টি বিদেশি ব্যাংকে ড. ইউনূসের ৭৫ কোটি টাকা


প্রকাশ: 05/08/2022


Thumbnail

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বিশ্বে বিপুল সম্পদের মালিক। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ পাচার সংক্রান্ত একটি বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, বিশ্বের অন্তত নয়টি ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং এই সমস্ত একাউন্টে সব মিলিয়ে প্রায় ৭৫ লাখ ডলার পাওয়া গেছে যা বাংলাদেশী টাকায় ৭৫ কোটি টাকার কাছাকাছি। ড. ইউনূসের যে সমস্ত ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জেপি মরগান চেস ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অ্যাকাউন্ট আছে ১৯৯৭ সালে থেকে। ব্যাংক অব আমেরিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একাউন্টের খবর পাওয়া যায় ২০০১ সালের নভেম্বর থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সিটিব্যাংক এনএ'তে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংক একাউন্ট করেছিলেন ২০০৪ সালে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এইচএসবিসি'তে তিনি ২০০৬ সালে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছিলেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারের যে অর্থ সেই অর্থে এই চারটি ব্যাংকে রাখা হয়েছিলো। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশে উপার্জিত অর্থ এখানে রয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে জেপি মরগান চেস ব্যাংক থেকে হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনের তহবিলের জন্য অর্থ প্রদান করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জেপি মরগান চেস ব্যাংকের একাউন্টটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে থাকলেও এটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনূস সেন্টারের বলে জানা গেছে। কিন্তু এই ব্যাংকের হিসেব-নিকেশ ইত্যাদি সব তদারকি করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্যাংক অব আমেরিকার যে একাউন্ট টি আছে সেটি ড. ইউনূস এবং তার স্ত্রীর যৌথ নামে।

সিটি ব্যাংক এনএ'তে অ্যাকাউন্টটি ড. ইউনূস পরিচালনা করলেও এটি সোশ্যাল বিজনেসের নামে পরিচালিত। এইচএসবিসি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডের দুইটি ব্যাংকে একাউন্ট করেছেন। ক্রেডিট সুইস ভিত্তিক ব্যাংকে একাউন্ট করেছেন এবং ইউবিএস ব্যাংকেও তার অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে। ক্রেডিট সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করেছেন ১৯৯৮ সালে এবং সেই হিসেব বিবরণীতে দেখা যায় যে, নরওয়ে ভিত্তিক টেলিনর কোম্পানির সঙ্গে গ্রামীণের চুক্তি করার কারণে কমিশন বাবদ পেয়েছিলেন দুই লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক যা বাংলাদেশী টাকায় দুই কোটি টাকার কাছাকাছি। এছাড়াও টেলিনর থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সময় বাংলাদেশি টাকায় বিশ কোটি টাকার মতো নিয়েছেন। এছাড়া ইউবিএস ব্যাংকেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি একাউন্টের খবর পাওয়া গেছে। সেই একাউন্টটি খোলা হয়েছিল ২০০২ সালে। এই ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রায় ৩ লাখ সুইস ফ্রাঙ্কের খবর পাওয়া গেছে। এই ব্যাংকের একাউন্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্থায়ী আমানত হিসেবে চিহ্নিত অর্থাৎ ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট হিসেবে তিনি ইউবিএস ব্যাংকে একাউন্টটি করেছেন। এছাড়া জাপানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্যা ব্যাংক অব টোকিও মিতসুবিশি-ইউএফজে ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্থিতির পরিমাণ গত ৩০শে জুন সময় পর্যন্ত বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২ কোটি টাকা। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস  সিঙ্গাপুরে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছেন। সিঙ্গাপুরের ব্যাংক একাউন্টে ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থিতির পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ২৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশ্বের নয়টি ব্যাংক একাউন্টে স্থিতির পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, এই হিসেব সম্পূর্ণ নয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আফ্রিকার অন্তত দুটি দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। এই টাকাগুলো তিনি বাংলাদেশের আয়কর বিবরণীতে প্রকাশ করেননি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে প্রচুর বক্তৃতা রাখেন, তার বইয়ের রয়েলিটি এবং সামাজিক যোগাযোগ ব্যবসা এবং নানারকম পুরস্কারের অর্থ তিনি এসব ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন। তবে বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র বক্তৃতা, বইয়ের রয়েলিটি এবং পুরস্কারের টাকা নয়। বরং ইউনূস বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের পক্ষে লবিং করেছেন এবং এই লবিংয়ের টাকা তিনি এ সমস্ত ব্যাংক হিসেবে রেখেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা নিষ্পত্তির প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অর্থ সম্পদের বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ সময় দেখা যায় যে, গ্রামীণ টেলিকম প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গ্রামীণ টেলিকমের এক হিসেবের প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, ড. ইউনূস এখানে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন, গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ ইউনূস সেন্টারে স্থানান্তরিত করেছেন, ইউনূস সেন্টার থেকে আবার সেই অর্থ আরেক জায়গায় স্থানান্তর করেছেন। এখন বিদেশে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক ড. ইউনূস কিভাবে হলেন, সেটি তদন্তের দাবি রাখে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭