ইনসাইড পলিটিক্স

তত্ত্বাবধায়ক সরকার না, বিএনপি মাঠে নামছে ৫ ইস্যুতে


প্রকাশ: 07/08/2022


Thumbnail

বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসেছে। কৌশলগত কারণে এ সরে আসা বলে বিএনপি'র একাধিক নেতা বলেছেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং পাঁচটি জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তারা রাজপথ উত্তপ্ত করতে চায়। বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, তাদের এখন প্রথম লক্ষ্য হলো সরকার পতন। আর এই জন্য তারা এই পাঁচটি ইস্যুকে সামনে আনছেন। বিএনপি নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী কার কাছে করবো, এই সরকারের পতনই হলো আমাদের একমাত্র দাবী। আর এই সরকার এখন জনবিরোধী হয়ে উঠেছে। কাজেই জনগণের যে সমস্যা সেই সমস্যা গুলোকে আমরা সামনে আনতে চাই। বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে তারা তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছেন। এখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে অন্যান্য ইস্যুগুলোকে সামনে আনতে চায় এবং এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি দিতে চায়। যে সমস্ত ইস্যুগুলো নিয়ে বিএনপি এখন আন্দোলন শুরু করবে বলে জানা গেছে তার মধ্যে রয়েছে-

১. জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি: গত শুক্রবার জ্বালানি তেলের যে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে এটি বিএনপির নেতাদের জন্য একটি চরম সুযোগ বলে তারা মনে করছেন। তারা মনে করছেন, এটি এমন একটি ইস্যু যেটি নিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের সমর্থন পাওয়া যাবে এবং জনগণও এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। এজন্য তারা কর্মসূচির তালিকায় প্রথমে রেখেছে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। এমনকি ভোলায় তাদের একজন কর্মী মারা গেলে সেই শোকসভাতেও তারা জ্বালানি তেলের  ইস্যুটিকে সামনে এনেছে। বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা দেখতে চায়। এটি দেখার পর এ ব্যাপারে বড় ধরনের কর্মসূচি দেবে বলে জানা গেছে।

২. লোডশেডিং: বিএনপি কিছুদিন ধরে লোডশেডিং নিয়ে আন্দোলন করছে এবং লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতেই ভোলায় দুই জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আর সামনের দিনগুলোতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লোডশেডিংকেও তারা যুক্ত করতে চায় বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।

৩. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিএনপির জন্য একটি বড় ইস্যু। অতীতে এই ইস্যুটিকে প্রাধান্য দেয়নি। কিন্তু বিএনপি নেতারা বলছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্য যে অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে তাতে এ নিয়ে আন্দোলন করার কোনো বিকল্প তাদের কাছে নেই। কারণ, জনগণ এখন হাঁসফাঁস করছে। মধ্যবিত্তের জন্য এখন জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে রাজনৈতিক ইস্যু করাটা তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মনে করছেন।

৪. দুর্নীতি: বিএনপি নেতারা বলছেন যে, আজকের এই অবস্থার প্রধান কারণ হলো দুর্নীতি। বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের নামে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। এ কারণেই আজকের এই সংকটে। আর তাই বিএনপি তাদের আন্দোলনের ইস্যুতে দুর্নীতিকেও যুক্ত করতে চায়। বিশেষ করে এ বিষয়ে তারা শ্বেতপত্র প্রকাশ, গণ-তদন্ত কমিশন গঠন ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করতে চায় বলে জানা গেছে। বিএনপি জনগণের কাছে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিতে চায়। তারা বলতে চায় এখন যে সংকট এবং সমস্যা তার প্রধান কারণ হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি যদি না থাকতো তাহলে এই সমস্যাগুলো তৈরি হতো না।

৫. গণপরিবহনের নৈরাজ্য: গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনা ইত্যাদি নিয়েও বিএনপি এখন সরব হতে চায়। বিএনপি নেতারাই বলছেন যে, এতদিন তারা যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ইস্যু যেগুলোতে জনগণের আগ্রহ নেই এসব নিয়ে কর্মসূচি গ্রহণের কারণে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলো।

এখন তারা জনগণের জন্য যে ইস্যুগুলো গুরুত্বপূর্ণ, যে ইস্যুগুলোতে জনগণ সংকটে আছে সেই ইস্যুগুলোকে সামনে আনতে চায়। বিএনপি নেতারা বলছেন, যদি সরকারকে হটানো যায় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমনিতেই আসবে। এ নিয়ে আন্দোলন করার দরকার নেই। সরকারের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে কোন লাভ নেই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭