ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারের ভেতরেই বিশ্বব্যাংকের সমর্থকরা


প্রকাশ: 08/08/2022


Thumbnail

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাংক একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল। বিশ্বব্যাংক সেই রিপোর্টের শিরোনাম ছিল 'একটি দক্ষ সরকারের রূপরেখা সরকারী খাতের সংস্কার'। এই রিপোর্টটিতে বিশ্বব্যাংক গদবাধা কিছু কথা তুলে ধরেছিল। রিপোর্টটিতে তারা বলেছিল, বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমাতে হবে, সরকারকে ছোট করতে হবে, প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বব্যাংকের দেওয়া সেই রিপোর্টটি মানেনি। বিশ্বব্যাংকের সেই রিপোর্ট না মেনেও আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও গতিশীল নেতৃত্বে পাঁচটি বছর রাষ্ট্র পরিচালনায় স্থাপন করে অভূতপূর্ব সাফল্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হয় অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশ গড়ার নবতর সংগ্রাম। আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেছিল পশ্চাৎগামী উল্টোরথের রশি টেনে ধরতে। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছিল সম্মুখ পানে।

সে সময় বিশ্বব্যাংকের সেই রিপোর্টটি তৈরিতে বাংলাদেশের লেখকগণের মধ্যে ছিলেন, ড. রেজা কিবরিয়া, ড. মসিউর রহমান এবং ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ড. রেজা আওয়ামী লীগের ১৯৯৬ সালের সরকারের অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি গণ অধিকার পরিষদের আহবায়ক। ড. মসিউর রহমান বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৬ সালে যারা বিশ্বব্যাংকের হয়ে সেই রিপোর্টটি তৈরিতে সহযোগীতা করেছিলেন, তারাই এখন সরকারে রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বব্যাংকের প্রেতাত্মারা সরকারের মধ্যেই বাসা বেধেছে। ১৯৯৬ সালের বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। 

এবারও সরকার আইএমএফ এর কাছ থেকে অর্থ সহায়তা চেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও ঋণ নেওয়ার কথা হচ্ছে। সেখানেও তারা বরাবরের মতোই কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে এবং এই শর্ত পূরণের জন্য বাংলাদেশে জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। সব ক্ষেত্রে ভর্তুকি কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশকে। আর এই সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে দেশকে নিয়ে যাওয়ার পেছনে কাজ করছে সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেতাত্মারা। সরকারের মধ্যেই ঘাপটি মেরে বসে থেকে তারা দেশের মানুষকে জিম্মি করার পায়তারা করছে। সরকারের ভেতরেই ভূত হয়ে বসে থেকে ড. মসিউর রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীরাই বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংকের কাছে জিম্মি করছে। যেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশকে বের করে এনেছিলেন। আবার সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পায়তারা চলছে।

পদ্মা সেতু তৈরির সময়ও বিশ্বব্যাংক নানা রকম শর্ত দিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে জিম্মি করার একটি পায়তারা করেছিল। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সি নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সেই শর্ত রাজি না হয়ে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করেছিল। আজ পদ্মা সেতু স্বপ্ন নয়, বাস্তব। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একটি স্বাধীন অর্থনীতি দিয়েছিল, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে, সেখানে আবার আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশকে জিম্মি করে ফেলা হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে যারা বাংলাদেশকে জিম্মি করতে পায়তারা করেছিল আজও সেই ভূত রয়েই গেছে। এরা আসলে একই সুতায় গাঁথা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭